গতকাল মিঠুন চক্রবর্তী মাতৃহারা হয়েছেন। শেষ বয়সে মুম্বইতে ছেলের কাছেই থাকতেন তিনজন শুক্রবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন শান্তিরানি চক্রবর্তী। অভিনেতার পরিবারের তরফেই তাঁদের এই পারিবারিক শোকের কথা জানানো হয়েছে।
তবে মুম্বইতে যাওয়ার আগে শান্তিরানি চক্রবর্তী জোড়াবাগান এলাকায় থাকতেন তাঁর চার সন্তান (তিন মেয়ে, এক ছেলে) এবং স্বামীকে নিয়ে। এরপর ছেলে বলিউডে নিজের জায়গা বানালে প্রতিষ্ঠিত হলে মা বাবাকে তাঁর কাছে নিয়ে যান। এ হেন মানুষের সঙ্গে টলিউডের আরেক ব্যক্তিত্বের যোগ আছে। শিলাজিৎ মজুমদার।
শিলাজিৎ মজুমদারের পরিবার এবং শান্তিরানি চক্রবর্তী অর্থাৎ মিঠুন চক্রবর্তীর পরিবার একই পাড়ার বাসিন্দা। তাঁরা একই জায়গায় থাকতেন। সেই সূত্রেই আলাপটা তাঁদের ভালোই ছিল। এদিন মহাগুরুর মায়ের প্রয়াণের খবর পেয়ে স্মৃতিচারণ করে একটি পোস্ট লেখেন গায়ক।
তিনি এদিন তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় মিঠুন এবং তাঁর মায়ের একটি সাদা কালো ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘ছোটবেলায় দুজনকে ভীষণ ভয় পেতাম।এক ছিল আমার সেজো মামিমা, ডাকলেই হিম হয়ে যেত হাড়। আর একজন শান্তি দিদা, মা ডাকতো শান্তি মাসি বলে। আমিও ডেকে ফেলতাম মাঝে মধ্যে। দিদার চোখের দিকে তাকালেই কীরকম একটা হতো। ওঁর ঢলঢলে চোখে একটা সম্মোহনী দৃষ্টি ছিল। মা তো বদমায়েশি কিছু করলেই ভয় দেখাতো শান্তি দিদাকে বলে দেব।এই দিদা রত্নগর্ভা, খুবই কষ্টে মানুষ করেছিলেন তার তিন মেয়ে আর এক ছেলেকে। ছেলে বিখ্যাত হয়ে যাওয়ার পর তিনি আমাদের পাড়ার লোক বলেই অহঙ্কারে ফেটে পড়তাম আমরা। কিন্তু শান্তি দিদা বদলাননি, ছেলে বিশ্ব বিখ্যাত হওয়ার পরও কোনোদিন অনেক দেখে বোঝা যায়নি উনি সুপারস্টার মিঠুন এর মা।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আমার ছোটোবেলার ভালো লাগার চরিত্রদের মধ্যে উনি ছিলেন একজন। ভয় পেতাম শান্তি দিদাকে কিন্তু ভালোবাসতেন আমাদের। আমাকে বলে নয় সবাইকে। ওঁর স্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এরকম কেউ ওঁর পরিচিত ছিল বলে আমি জানিনা। ওঁর নাম শুধু শান্তি ছিল না উনি মাথায় হাত দিলে মনে হতো শান্তি পেতাম।একটু আগে মায়ের থেকে খবর পেলাম। শান্তি দিদা চলে গেল। মায়ের যথারীতি মনটা ভালো নেই। পুরনো অ্যালবাম থেকে এই ছবিটা মা পাঠাল আমাকে। দেখা হতো না কিন্তু মনে থাকতেন, খবর নিতাম।’ পরিশেষে তিনি লেখেন, ‘মনটা খারাপ হয়ে গেল। পৃথিবী একজন মাকে হারাল। এরকম স্নেহময়ী নিরহংকারী মানুষ আমি খুব কম দেখেছি।’
অনেকেই তাঁর এই পোস্টে মতামত জানিয়েছেন নিজেদের। এক ব্যক্তি লেখেন, 'মা পাঠাল এবং দেখা হতো না। এই দুটি শব্দ সমষ্টি জীবনকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, মৃত্যু কত আপন!' আরেক ব্যক্তির মতে, 'ভালো মানুষের এ পৃথিবীতে খুবই অভাব! তার উপর চলে যাওয়া! দাদার সাথে সাথে অনেকেই অভিভাবক হারাল!'। অন্য আরেকজন লেখেন, 'সম্ভবত বিগ বসে আপনার ও মিঠুনদার কথাবার্তায় এই শান্তিদিদার কথা শুনেছিলাম। অনন্তলোকে ভালো থাকবেন।'