গত কয়েকদিন ধরেই যাদবপুর কাণ্ড নিয়ে সরব রাজ্য রাজনীতি। তবে আশ্চর্যের ব্যাপার পাঁচ তারকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রের রহস্যমৃত্যু নিয়ে মুক খোলেননি বহু তারকাই। এমনকী, যারা পান থেকে চুন কসলেই ফেসবুক বা টুইটারে লম্বা পোস্ট দেন, তাঁরাও চুপ। সেটা কি শুধুই যাদবপুরের নাম জড়িত আছে বলে।
এরই মধ্যে টলিউডের পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের একটি পোস্ট চোখ টেনেছে নেট-নাগরিকদের। যেখানে যাবদপুর-কাণ্ড নিয়েই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন তিনি। তবে তাতে একটা শব্দও খরচ করা হয়নি হতভাগ্য সেই পড়ুয়ার মৃত্যু নিয়ে। না তিনি দোষীদের কড়া শাস্তির পক্ষে সওয়াল করেছেন। বরং নেটপাড়া বলছে, কমলেশ্বর ‘আড়াল’ করার চেষ্টা করেছেন এসএফআই বা বামপন্থী ছাত্র সংগঠনকে।
কী লিখলেন কমলেশ্বর ফেসবুকে?
টলিউডের বিখ্যাত এই বাম-মনস্ক পরিচালক ফেসবুকে লিখলেন--
‘'বামপন্থী' বা 'মার্ক্সবাদী'র মতো জেনেরিক বা সার্বজনীন শব্দগুলো ব্যবহার করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুষ্কৃতী আর প্রতিবাদীদের এক আসনে বসিয়ে দেওয়ার চক্রান্তে নেমেছে দুষ্কৃতীদের আশ্রয় দেওয়া রাজ্য ও কেন্দ্রের শাসকদলের লোকেরা । 'স্বাধীন' ও 'অতিবাম' নামাঙ্কিত বামপন্থার মুখোশধারী এই দুষ্কৃতীরাই নির্বাচনের সময় রাজ্যের ও কেন্দ্রের শাসকদলের ধ্বজা ধরে। তাই এদের বাঁচাতে আবার ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে শীর্ষ ক্ষমতার তল্পিবাহকেরা। সাবধান।’
কমলেশ্বরের এই পোস্টের পরেই প্রতিবাদে সামিল হন নেট-নাগরিকরা। প্রশ্ন তোলেন, কীভাবে একটাও শব্দ তিনি খরচা করলেন না সেই ছেলেটিকে নিয়ে বা তার পরিবারকে নিয়ে। অনেকেরই প্রশ্ন এ কেমন প্রতিবাদ? যেখানে শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক দলের সাফাই দেওয়া হয়। র্যাগিং-কাণ্ডে কেন একবারও যাবদপুরের নাম সরাসরি আনলেন না মুখে।
একজন কমেন্টে লিখলেন, ‘রাজনীতি ছাড়ুন মশাই। আপনিও জানেন আর সবাই জানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় যে বাম মানসিকতার পীঠস্থান। সামনে অস্বীকার করতে পারেন, কিন্তু সাধারণ মানুষ গাধা নয়, তারা কিছু জানেন না বোঝেন না এটা ভাববেন না। কিন্তু এক্ষেত্রে রাজনীতি নয়। এখানে একটা ছাত্রের জীবন শেষ হয়ে যাওয়ার মত মর্মান্তিক ঘটনা জড়িত। রাজনীতির ঊর্ধে উঠে এই বিষয় নিয়ে একটা দুঃখজনক বা প্রতিবাদী বক্তব্য তো দেখলাম না। অথচ যখন এই ঘটনাটা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের, ফলে মার্ক্সবাদীদের জড়িয়ে ফেলা হচ্ছে তখন রাজনৈতিক রঙের কারণে গায়ে জ্বালা ধরছে খুব আপনাদের মত মানুষদের। রাজনৈতিক রং ছেড়ে একবারও তো এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য সহানুভূতি প্রকাশ করতে।’
যদিও কমলেশ্বরের পরের পোস্টে কটাক্ষ করা হয়েছে সরাসরি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কেই। এক্ষেত্রেও অবশ্য নাম না করেই। তিনি লিখলেন, ‘সি সি টিভি নাহয় লাগানো হলো। টিভির পর্দায় চোখ রাখবেন কারা? সেই কর্তৃপক্ষ যাঁরা এতোকাল ধরে সব দেখেশুনেও চুপ করেছিলেন?’