লরি এবং জর্জ শ্যাপেল, বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক যমজ, গত ৭ এপ্রিল মারা গিয়েছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁদের বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। লরি ও জর্জের জন্মগ্রহণ থেকে শুরু করে জীবন ধারণ পর্যন্ত অজানা কাহিনী রীতিমত অবাক করে সকলকেই। আংশিকভাবে মাথার খুলি জোড়া ছিল তাঁদের। লরি এবং জর্জই প্রথম সমলিঙ্গের যমজ, যাঁরা একই অঙ্গে জড়িত ছিলেন কিন্তু তাঁদের লিঙ্গ ছিল আলাদা। লরি ছিলেন মহিলা, আর জর্জ ছিলেন ট্রান্সজেন্ডার। তবে তিনি পুরুষের মতোই পোশাক পরতেন।
- লরি এবং জর্জের মৃত্যুর কারণ
লাইবেনস্পারগার ফিউনারেল হোমস দ্বারা প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে, তাঁরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালে অজ্ঞাত কারণে মারা গিয়েছেন। ১৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৬১ সালে, পেনসিলভেনিয়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন, লরি এবং জর্জ। তাঁরা দুজনেই একটি স্বাভাবিক জীবনযাপন করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাঁদের অস্বাভাবিক অসুস্থতা শুধুমাত্র শারীরিকভাবে নয়, শখ, ব্যক্তিত্ব এবং কর্মজীবনেও প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়েছিলেন।
- লরি এবং জর্জ ছিলেন ক্র্যানিওপাগাস যমজ
লরি এবং জর্জ ছিল ক্র্যানিওপাগাস যমজ এবং তাঁদের মাথার খুলির ৩০ শতাংশ একে অপরের সঙ্গে মিশে গিয়েছিল। বলা বাহুল্য, এটি ছিল যমজ ভাই এবং বোনের একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে জন্ম নেওয়ার বিরল রূপ। এ অবস্থায় লরি ভালোভাবে হাঁটতে পারলেও জর্জের স্পিনা বিফিডা ছিল। এ কারণে তিনি হাঁটতে পারতেন না। ঘোরাঘুরি করার জন্য তিনি হুইলচেয়ারের মতো স্টুলে বসে চলতেন, আর এগোনোর জন্য লরি ধাক্কা দিতেন।
- কীভাবে জীবিকা নির্বাহ করতেন দু'জনে
প্রায় ২৪ বছর ধরে একটি প্রতিষ্ঠানে বসবাস করার পর, লরি এবং জর্জ একটি দুই বেডরুমের অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন। জর্জ ৯) এর দশকে একজন পেশাদার গায়ক হিসাবে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি পেয়েছিলেন। লরি একজন টেন-পিন বোলার ছিলেন এবং দীর্ঘদিন ধরে একটি হাসপাতালে কাজ করেছিলেন।
- ২০১৫ সালে বড় রেকর্ড অর্জন করেছিলেন লরি এবং জর্জ
২০১৫ সালে, লরি এবং জর্জকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক যমজ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। এর আগে এই রেকর্ডটি মাশা এবং দাশা ক্রিভোশেলিয়াপোভা নামে যমজ ব্যক্তিদের নামে ছিল, কিন্তু ২০১৫ সালে মাত্র ৫৩ বছর বয়সে মারা গিয়েছিলেন তাঁরা, তারপরে এই রেকর্ডটি লরি এবং জর্জের গাতে এসেছিল।এখন দেখার বাকি এই রেকর্ডের পরবর্তী ধারক কে হতে পারেন।