শুরু হয়ে গিয়েছে উৎসবের মরশুম। বকরি ইদ ঘিরে বিশ্বের নানান প্রান্তে উৎসবের আবহ দেখা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার ২৯ জুন পড়েছে বকরি ইদ। এই ইদকে কোরবানির ইদ বা ইদ-আল-আধা হিসাবেও উদযাপন করা হয়। ত্যাগই হল এই উৎসবের মূল প্রাণকেন্দ্র। এই ইদ উৎসব ঘিরে ইসলাম ধর্মে কিছু নিয়ম মেনে উদযাপন চলে। দেখে নেওয়া যাক, বকরি ইদের ইতিহাস।
ইসলাম ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, নবি ইব্রাহিম স্বপ্নে একবার দেখেছিলেন, তিনি ঈশ্বরকে খুশি করতে নিজের সন্তান ইসমাইলকে কুরবান বা বলি দিচ্ছেন। সেই স্বপ্নের কথা ইব্রাহিম তাঁর সন্তানকে বলেন। শুনে ইসমাইল বলেন, তাঁর বাবা যেন ঈশ্বরের ইচ্ছা পূরণ করেন। এদিকে, ইব্রাহিম যখন নিজের ছেলেকে বলি দিতে যাচ্ছেন, তখনই তাঁর এই আত্মত্যাগ দেখে খুশি হন ঈশ্বর। তখন ঈশ্বর তাঁর দূত গ্যাবরিয়েলকে পাঠান। গ্যাবরিয়েল একটি ভেড়াকে ইব্রাহিমের কাছে এনে, বলেন, আল্লাহ তাঁর ভক্তিতে খুশি হয়ে তাঁর জন্য এই ভেড়াটি পাঠিয়েছেন। গ্যাবরিয়েল বলেন, ইব্রাহিম যেন ছেলের জায়গায় ওই ভেড়াকে কুরবান বা বলি প্রদান করেন। সেই থেকে বকরি ইদে ভেড়া বা ছাগ বলির প্রচলন। এই ইদ বিশেষত বলি বা আত্মত্যাগ ঘিরে উদযাপিত হয়।
এদিকে, এই উৎসব ঘিরে বেশ কিছু রীতি প্রচলিত। এদিন সকালে স্নান করে নতুন পোশাক করে মসজিদে গিয়ে নমাজ পাঠের নিয়ম প্রচলিত রয়েছে। এরপর কোনও মিষ্টি জাতীয় খাদ্য দিয়ে এদিন পরিবারের সঙ্গে একযোগে খাওয়া শুরু করেন সকলে। পরিবার একত্রিত হয়ে এই উৎসব পালন করে। এমন দিনে আল্লাহর উদ্দেশে ছাগল, ভেড়া কিম্বা উট কোরবানির প্রচলন রয়েছে। এছাড়াও বাড়িতে রান্না হয় লাচ্ছা পরোটা, মাংস, সিমাই। তা সকলে মিলে ভাগ করে খাওয়ার রীতি প্রচলিত।
উল্লেখ্য, ইদ ঘিরে এই উৎসব কেবলমাত্র মুসলিম সমাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। তা ছড়িয়ে পড়ে জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সকলের মধ্যে। কোভিড কালে এই উৎসবে বাকি বিভিন্ন উৎসবের মতোই ভাটা পড়েছিল। তবে ধীরে ধীরে তা চেনা নিয়মে নিজের উজ্জ্বলতা ফিরে পায়।