ইদ মানে আনন্দ, ইদ মানে বন্ধু ও আত্মীয়দের সঙ্গে উৎসবে মেতে ওঠা। ইদ মানে নতুন জামাকাপড় পড়ে ঘুরতে যাওয়া, ইদি নিয়ে জোর মাতামাতি। বছরের এই দিনটিতে নতুন জামাকাপড় কেনার হিড়িক থাকে দোকানে দোকানে। তবে চলতি বছর করোনার বাড়বাড়ন্তের কারণে সমস্যা তো রয়েছেই। এর মাঝে সাবধানতা অবলম্বন করে কিছুটা কেনাকাটা অনেকে করে রেখেছেন নিশ্চয়ই।
যত কাজের চাপই থাক না কেন, নতুন জামাকাপড়ে নিজেকে সাজিয়ে তোলার সুযোগ হাতছাড়া করবেন না কেউ। ইদের দিনের পোশাক, সাজগোজ নিয়ে চিন্তাভাবনা চলে বহুদিন ধরে। এখন দরজায় কড়া নাড়ছে খুশির ইদ, তাই একবার পোশাক ও সাজগোজের প্রস্তুতি সম্পর্কে রিভিশান দিয়ে নেওয়া যাক।
কেমন হবে ইদের দিনের পোশাক:
ইদের দিন পোশাক হোক একটু আরামদায়ক। এক্ষেত্রে হালকা সুতি হলে বেশি ভালো হয়। শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, আনারকলি যাই হোক না কেন, তার সঙ্গে ম্যাচিং করে পরা যায় দুটি চুড়ি, পায়ে দু ফিতের ডিজাইনার চটি। তবে সুতি পরতে না চাইলে এদিন শিফন, জর্জেট, ঢাকাই জামদানি, মসলিন, টাঙ্গাইল, সিল্ক, জামদানির শাড়ি, জরদৌসি কাজ করা আনারকলি বা সালোয়ার কামিজ পরা যেতে পারে। আবার সিল্কের সালোয়ার কামিজও হতে পারে আপনার প্রথম পছন্দের।
কী ভাবে সুন্দর দেখাবে আপনাকে:
ইদের দিনে কাজের ভিড়ে নিজেকে সুন্দর দেখাতে হলে একটু সচেতন হতেই হয়। সকাল, দুপুর ও রাতের সাজ হোক পৃথক পৃথক।
সকালের সাজ:
ইদের সকালে কাজের চাপ থাকে, তাই চলাফেরা করতে সহজ হয় এমন কোনও পোশাক বেছে নিন। সকালে নিজের পছন্দের রঙের হাল্কা জামাকাপড় পরুন। যাতে চলাফেরা ও কাজ করতে স্বচ্ছন্দ বোধ করতে পারেন।
সকালের মেকআপও হোক হাল্কা। চোখে কাজল পরতে চাইলে কালোর স্থানে বাদামি কাজল পরুন। মুখে লাগান ফাউন্ডেশন ও তার ওপর পাওডার।
সকালে সালোয়ার কামিজ পরলে, তার সঙ্গে সাজগোজও করুন ন্যাচরাল ও শুভ্র। চোখে কাজল লাগান। এসময় ঠোঁটে হালকা রঙের লিপিস্টিক লাগাতে পারেন। চুলে টাইট বা আলগা করে খোপা করতে পারেন বা বিনুনি করেও ছেড়ে রাখতে পারেন।
দুপুরের সাজ:
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাজেহাল দেশ। তখন ইদের দুপুরে বাড়িতেই থাকার চেষ্টা করুন। দুপুরের জন্যও হালকা রঙের পোশাক বেছে নিন। জামদানি, সিল্কের শাড়ি পরুন।
মুখে ফাউন্ডেশনের সঙ্গে পাওডার লাগিয়ে নিন। হাল্কা রঙের ব্লাশঅন লাগাতে পারেন দুই গালে। ঠোঁটে লিপস্টিকের পরিবর্তে লিপগ্লস লাগাতে পারেন। আবার লিপলাইনার দিয়ে ঠোঁট এঁকে লিপস্টিকও লাগানো যেতে পারে। চোখে আইলাইনার লাগিয়ে এর ওপর লাগাতে পারেন শেড করা আইশ্যাডো। আইলাইনার দিয়ে টানা টানা চোখ আঁকতে পারেন। এবার আইশ্যাডোর পালা, এর জন্য চোখের পাতায় প্রথমে বেজ কালার করে নিন। তারপর এক রঙের বা শেড করে দুই রঙের আইশ্যাডো লাগান। পোশাকের সঙ্গে মানানসই ছোটো দুল পরুন কানে। গলায় পরুন পেন্ডেন্ট দেওয়া চেন।
রাতের সাজ:
সারাদিনের কাজের ঝক্কি সামলে, রাতে স্বস্তি পেতে পারেন। তাই রাতে চুটিয়ে সাজুন। আশপাশে কোনও আত্মীয়ের বাড়ি গেলে বা বন্ধুবান্ধবদের আমন্ত্রণ জানালে একটি সুন্দর শাড়ি পরুন। ভারি আনারকলি বা সালোয়ার কামিজও পরতে পারেন। মুখ, গলায় ফাউন্ডেশন লাগিয়ে কমপ্যাক্ট পাওডার লাগিয়ে নিন। চোখের পাতায় লাগান মাসকারা। এ সময় সুন্দর করে আইলাইনার লাগিয়ে গাঢ় রঙের আইশ্যাডো ব্যবহার করতে পারেন।
রাতের সাজের জন্য জমকালো একটি শাড়ি বেছে রাখলে মেক আপ করুন পরিচ্ছন্ন ও উজ্জ্বল। চোখের ওপরে অ্যাকোয়া ব্লু এবং গ্রে আইশ্যাডো একসঙ্গে মিলিয়ে লাগান। চোখের ইনার কর্নারে গোল্ড বা শিমারি পিঙ্ক আইশ্যাডো স্মাজ করে লাগিয়ে নিন। তবে গালের জন্য হাল্কা রঙের ব্লাশার বেছে নিন। ব্লাশারের রঙ বেশি উজ্জ্বল না-হওয়াই ভালো। সকালের মতো রাতের সাজের জন্যও হাল্কা রঙে লিপস্টিক বেছে নিন। লিপস্টিকের ওপর সামান্য লিপগ্লসও লাগাতে পারেন।
পুরুষদের সাজ:
এদিন পুরুষরা পায়জামা-পঞ্জাবি পরতে পারেন। আবার চুড়িদারের সঙ্গেও ডিজাইনার পাঞ্জাবি পরা যায়। পঞ্জাবির ওপর চড়িয়ে নিতে পারেন একটি ডিজাইনার কোট।
বাচ্চাদের সাজ:
বাচ্চা মেয়েরা এদিন লেহেঙ্গা, সালোয়ার বা আনারকলিতে নিজেকে সাজিয়ে তুলতে পারে। কপালে লাগাতে পারে ছোট্ট একটি টিপ এবং কানে ছোট্ট দুল। আবার ঝুমকোও পরাতে পারেন তাদের। হাতে কাপড়ের সঙ্গে ম্যাচিং চুরি পরাতে ভুলবেন না।
বাচ্চা ছেলেদের জন্য তো কুর্তা-চুরিদার বা পায়জামা-পাঞ্জাবি তো রয়েছেই। বাচ্চাদের জন্য জ্যাকেট কিনুন ফুলের নকশা বা প্রিন্ট করা। এক রঙা জামাকাপড় না-কিনে মাল্টিকালারের ওপর জোর দিন।
মাস্ক মাস্ট:
এই ইদে যেটা ভুলবেন না সেটি হল মাস্ক। যদি কাছেপিঠে কোনও আত্মীয়ের বাড়ি যেতে হয় তা হলে প্রিন্টেড বা এমব্রয়ডারি করা মাস্ক পরতে পারেন। এগুলি সহজেই বাজারে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে এখন।