ছুটিতে ভ্রমণের জন্য থাইল্যান্ডের ব্যাংকক ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে স্বর্গরাজ্য। এখানকার প্রকৃতিক সৌন্দর্য, সংস্কৃতি, নানারকমের লোভনীয় পদ সারা বিশ্ব থেকে পর্যটকদের আকর্ষণ করে। দেশটিতে প্রতি বছর ১ কোটি ৬০ লাখ বিদেশি পর্যটকের আগমন ঘটে। তবে আপনি হয়তো এটা জানলে অবাক হবেন যে শুধুমাত্র প্রকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে নয়, অনেকেই ভূতুড়ে পরিবেশ উপভোগ করতেও ছুটে যান ব্যাংককে। আর এগুলোকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে ব্যাংককের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নির্জন পরিত্যক্ত ভবন এবং অন্যান্য স্থাপনা। প্রতিটি পরিত্যক্ত স্থাপনার একটি নিজস্ব গল্প আছে। এর মধ্যে অন্যতম আকর্ষণীয় দ্রষ্টব্যটি হচ্ছে ৪৯ তলার একটি গগনচুম্বী ভবন, যেটি বিগত ২৬ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
যদিও অনেকে এটিকে 'ঘোস্ট টাওয়ার' বলে সম্বোধন করেন, তবে এর আসল নাম সাথর্ন ইউনিক টাওয়ার। থাইল্যান্ডের প্রাণকেন্দ্র ব্যাংককে অবস্থিত এই টাওয়ারটি এখন আবর্জনার মত ভূতুড়ে এবং জীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। এই বিল্ডিংয়ে মানুষের প্রবেশ সম্পূর্ন ভাবে নিষিদ্ধ, তবু এখনও মানুষেরা নির্জন ভবনের ভিতরের ভৌতিক পরিবেশে রোমাঞ্চ নিতে অবৈধ উপায়ে ভিতরে প্রবেশ করে এবং ভিডিয়ো তৈরি করে ইউটিউব এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে পোস্ট করে।
বিখ্যাত থাই স্থপতি, রাংসান তোরসুওয়ান, ১৯৯০ সালে এই সুন্দর ভবনটি নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন। তবে ১৯৯৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারককে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয় তোরসুওয়ান। ১৯৯৭ সালে আর্থিক সংকট আঘাত হানে থাইল্যান্ডে অর্থনীতিতে, ফলে এক দিকে তোরসুওয়ানের গ্রেপ্তারি ও অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ৮০ শতাংশ নির্মান সম্পূর্ণ হওয়ার পরেও বন্ধ হয়ে যায় নির্মান কাজ। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে এই ভবনটি একটি পুরানো সমাধিক্ষেত্রের উপরে নির্মিত হয়েছিল এই কারণে এটি ভূতুড়ে। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ৪৩তম তলা থেকে একজন সুইডিশ ফটোগ্রাফারের মৃতদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল। এরপর থেকে এর ভৌতিক কাহিনী আরও বেশি বেশি করে ছড়িয়ে পড়ে।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভূতের গল্পও বাড়তে থাকে। ২০১৭ সালে একটি হরর ফিল্ম, The Promise এর শুটিং হয়েছিল এই ভবনে। লোকেদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার জন্য ভবনটির চারপাশে মোতায়েন রয়েছে নিরাপত্তা কর্মী কিন্তু দিনের বেলাতেও পরিত্যক্ত ভবনে প্রবেশ করার সাহস করেন না নিরাপত্তা কর্মীরা।