ভারতীয় নৌবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করতে বড় পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় সরকারের। বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার প্রতিরক্ষা বিষয়ট কমিটির বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্যে ২০০টিরও বেশি ব্রহ্মোস মিসাইল কেনা হবে। এর জন্যে ১৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা খরচ করা হবে। এছাড়াও ভারতীয় বায়ুসেনার মিগ-২৯ যুদ্ধবিমানের জন্য অত্যাধুনিক ইঞ্জিন তৈরির চুক্তিকে সবুজ সংকেত দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। রাশিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়েই এই ইঞ্জিনগুলি তৈরি হবে বলে জানা গিয়েছে। এর জন্যে ৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, মার্চের প্রথম সপ্তাহেই এই মিসাইল কেনার জন্যে ব্রহ্মোস এয়েরোস্পেসের সঙ্গে চুক্তি হবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার। আগামী ৫-৬ বছরের মধ্যে এই ২২০টি মিসাইল নৌবাহিনী হাতে পাবে বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, প্রতিপক্ষ রণতরীকে ঘায়েল করার জন্যে ভারতীয় নৌবাহিনীর মূল হাতিয়ার হল এই ব্রহ্মোস মিসাইল। উল্লেখ্য, ভারত এবং রাশিয়ার যৌথ সমন্বয়ে ব্রহ্মোস এয়েরোস্পেস সংস্থাটি চলে। তবে বিগত দিনে ব্রহ্মোসের অনেক যন্ত্রাংশ পুরোপুরি ভারতে তৈরি হচ্ছে। উল্লেখ্য, ব্রহ্মোস হল একটি মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। ভারত ও রাশিয়ার যৌথ উদ্যোগে এই মিসাইল তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। এখন ভারত নিজের প্রযুক্তি ব্যবহার করেই এই মিসাইল তৈরি করতে শুরু করেছে। ভারত এখন ব্রহ্মোস মিসাইল বিদেশেও রফতানি করছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রের গতিবেগ শব্দের গতিবেগের থেকেও দ্রুত। যুদ্ধজাহাজ ছাড়াও ডুবোজাহাজ, বিমান এবং স্থল থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষপণ করা সম্ভব।
এর আগে গতবছর জুন মাসে রাজনাথ সিং ঘোষণা করেছিলেন, উত্তরপ্রদেশের ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডরে ব্রহ্মোস মিসাইল তৈরি করা হবে। বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় নৌবাহিনীর শক্তিবৃদ্ধির বিষয়টি ভারতের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারত মহাসাগর থেকে শুরু করে আরব সাগরে হুথি জঙ্গি থেকে সোমালিয়ার জলদস্যুরা বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালানোয় ভারতীয় অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এদিকে ভারতীয় বায়ুসেনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান। এই যুদ্ধবিমানের পুরনো ইঞ্জিনের বদলে নতুন অত্যাধুনিক ইঞ্জিনের বরাত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। আর তাছাড়া বুধবার আরও দু'টি চুক্তিকে সবুজ সংকেত দেখিয়েছে কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট। জানা গিয়েছে, এল-৭০ এয়ার ডিফেন্স গানের অত্যাধুনিক সংস্করণ এবং উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ব়্যাডার কেনার ক্ষেত্রেও সবুজ সংকেত দেখিয়েছে সরকার। এই দুই চুক্তি ৫ হাজার কোটি করে। উভয় ক্ষেত্রেই লারসেন অ্যান্ড টুব্রো তৈরি করবে এই সামরিক সরঞ্জামগুলি।