দেড়শো কোটির জনসংখ্যা আর কিছুদিনের মধ্যে স্পর্শ করবে নরেন্দ্র মোদীর ভারত। এমন এক কঠিন সময়ে অন্তর্বর্তী বাজেটে জনসংখ্যার বৃদ্ধি ও জনবিন্যাসে পরিবর্তনের জেরে সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে জানান কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এমনকী এটা মোকাবিলা করতে একটি কমিটি গঠনের কথা ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তাঁর কথায়, বিকশিত ভারত গড়তে গেলে এই কমিটি সমস্যাগুলি সমাধানে নিজেদের সুপারিশ সরকারকে পেশ করবে। বিরোধীদের দাবি, লোকসভা নির্বাচনের মুখে মুসলিমদের কোণঠাসা করতেই এই বার্তা দিয়ে হিন্দু মেরুকরণের লক্ষ্যে পদক্ষেপ করেছে মোদী সরকার।
এদিকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ নীতি আনতে চায় সংঘ পরিবার। আরএসএস মনে করে, এই দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য দায়ী মুসলিমরাই। তাই জন্মনিয়ন্ত্রণের পক্ষে সওয়াল করেন সংঘ নেতারা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৯ সালে স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে ভাষণে পরিবার ছোট রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবে তখন নিজের বক্তব্যে কোনও সম্প্রদায়ের নাম নিয়ে আসেননি। দেশে জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, হিন্দুদের তুলনায় মুসলিম জনসংখ্যার হার বেশি। তবে এখন কিছুটা হলেও সেই হার কমেছে। হিন্দুদের থেকে কমেনি। ২০০১ সালে যা ছিল তার তুলনায় ২০১১ সালে জনসংখ্যা বৃদ্ধির মোট হার হয় ১৭.৭ শতাংশ। মুসলিমদের বৃদ্ধির হার ছিল ২৪.৬ শতাংশ। আর আগের দশকে ওই হার ছিল ২৯.৫ শতাংশ। আর ২০০১–১১ এই পর্বে হিন্দুদের বৃদ্ধির হার ছিল ১৬.৮ শতাংশ।
অন্যদিকে সামনে লোকসভা নির্বাচন। পরিবার পিছু মুসলিমদের সদস্য সংখ্যা বেশি। সেটা আগের থেকে সামান্য কমেছে। তবে এবার জনসংখ্যা কমাতে কমিটি গড়া হলেও আরও অনেক কিছু ভাবার আছে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের মতো দেশে জন্মহার যদি ২.১ থাকে সেক্ষেত্রে জনসংখ্যা একই থাকার কথা। কিন্তু ২০২১ সাল থেকে ওই জন্মহার দুইয়ের নীচে নেমেছে। বাংলা ও দক্ষিণের রাজ্যগুলি জন্মনিয়ন্ত্রণের বিষয়ে অনেক বেশি সচেতন। আর তাই সেখানের জন্মহার দাঁড়িয়েছে ১.৬। কোনও রাজ্য কেন্দ্রীয় করের কত টাকা পাবে, সেটা রাজ্যের জনসংখ্যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে। ২০২১ সালের জনগণনা এখনও হয়নি। হওয়ার কথা ২০২৬ সালে।
আরও পড়ুন: সর্বদলীয় বৈঠক এড়িয়ে গেলেন শুভেন্দু–সহ বিজেপি বিধায়করা, ৮ তারিখ রাজ্য বাজেট
এছাড়া জনসংখ্যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে লোকসভার আসন সংখ্যা। কোন রাজ্যে ক’টি লোকসভা আসন থাকবে সেটা নির্ভর করে সেই রাজ্যের জনসংখ্যার উপর। তার ভিত্তিতে লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাস হওয়ারও কথা। এই বিষয়টি নিয়ে নির্মলা সীতারামনকে একাধিক প্রশ্ন করা হয়। যাবতীয় প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন নির্মলা সীতারামন। তবে আর্থিক বিষয়ক সচিব অজয় শেঠ বলেন, ‘ভারতের যা জনসংখ্যা, তা একদিকে সুবিধার, অপরদিকে সমস্যার। সব বিষয়টি খতিয়ে দেখে কমিটি রিপোর্ট দেবে।’