সপ্তর্ষি দাস
গত ২ জুন। ওড়িশার বালাশোরে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা। সেই মর্মান্তিক রেল দুর্ঘটনায় অনেকেই তাঁদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন। আবার এই দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজাও কিছু কম হয়নি। এবার এনিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ, নিজেদের দায় এড়িয়ে যাওয়ার জন্য এখন অন্তর্ঘাতের তত্ত্ব খাড়া করছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ টুইট করে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী ও রেলমন্ত্রী দায় এড়ানোর জন্য় ওই অন্তর্ঘাতের কথা বলছেন। এটা একেবারে পরিষ্কার। হেডলাইন ম্যানেজ করার জন্য় তিনি এসব বলছেন। তবে কমিশনার অফ রেল সেফটি জানিয়েছেন, বালাশোর ট্রেন দুর্ঘটনার পেছনে রেল ব্যবস্থার নানা ধরনের ত্রুটি রয়েছে। যার পরিণতিতেই এই দুর্ঘটনা।
জয়রাম রমেশের মতে, আসলে কোনটা অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার সেটাই ভুলে গিয়েছে মোদী সরকার। এদিকে একের পর এক বন্দে ভারত ট্রেনের উদ্বোধন করা হচ্ছে।
এদিকে দাবি করা হচ্ছে এর আগে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ইঙ্গিত দিয়েছিলেন এর পেছনে অন্তর্ঘাত থাকতে পারে। তবে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। সেই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৮ সালে একটি মেরামতি ও দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ আগে অপর একটি মেরামতির জেরে এই ত্রুটিপূর্ণ সিগন্যালিং ব্যবস্থা ছিল। এর জেরেই করমণ্ডল এক্সপ্রেস সেদিন অন্য় ট্র্যাকে চলে গিয়েছিল। সেখানেই অপর একটি ট্রেন ছিল। তারপরই ভয়াবহ দুর্ঘটনা।
এদিকে রেল দুর্ঘটনার পরেই ঘটনাস্থলে চলে আসেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি অবশ্য দুর্ঘটনার পেছনে একটি বিশেষ কারণকে চিহ্নিত করেন। তিনি জানিয়েছিলেন, পয়েন্ট মেশিনের সেটিংকে বদলানো হয়েছে। তদন্তেই জানা যাবে কীভাবে ও কেন এটা হয়েছিল।
এদিকে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল সিগন্যাল ব্যবস্থার নানা ধাপে ত্রুটি ছিল। টেলিকম সিস্টেমের মধ্যেও এই ত্রুটি ছিল। যার জেরে এই ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা হয়।
সেদিনের সেই দুর্ঘটনার ছবি দেখে শিউরে উঠেছিলেন অনেকেই। একের পর এক রেলের কামরা খেলনা গাড়ির মতো পড়ে রয়েছে। যাত্রীদের আর্তনাদ। একের পর এক দেহ বের করা হয় ট্রেন থেকে।
তবে সেই দুর্ঘটনাকে অন্তর্ঘাত, নাশকতা বলে চালানোর জন্য় উঠেপড়ে লাগে গেরুয়া শিবিরের একাংশ। তবে এর আগেও, ২০১৬ সালেও কানপুরে ইন্দোর-পাটনা এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনা হয়েছিল। তাতে মৃত্যু হয়েছিল ১৫২জনের। সেই সময় তৎকালীন রেলমন্ত্রী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, এনআইকে দিয়ে তদন্ত করা হোক। তবে পরে তদন্তে দেখা যায় কোনও নাশকতার জন্য ওই দুর্ঘটনা হয়নি।