বালাসোরের বাহানগা স্টেশনে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার এক মাস পূরণ হবে আগামিকাল। তার আগেই দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে একটি রিপোর্ট জমা দিল কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, সিগন্যালিং এবং টেলিকমিউনিকেশন দফতরের কিছু গলদের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। এই রিপোর্ট সম্পর্কে অবিহিক এক সরকারি আধিকারিক বলেন, 'জমা পড়া রিপোর্ট অনুযায়ী, রিলে রুমের দায়িত্বে থাকা কিছু কর্মীদের ত্রুটি ছিল। সাথে কয়েকটি বিভাগেরও ত্রুটি খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।' এদিকে কোনও ব্যক্তি ইচ্ছে করে এই দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে কি না, সেই প্রশ্নের জবাব এই রিপোর্টে দেওয়া হয়নি। আধিকারিক জানান, কোনও অপরাধমূলক ঘটনা ঘটেছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব সিবিআই-এর। (আরও পড়ুন: করমণ্ডল দুর্ঘটনার জের, বদল করা হল দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে)
এদিকে জানা গিয়েছে, সিবিআই তদন্ত যাতে কোনও ভাবে প্রভাবিত না হয়, এই কারণে এখনই সিআরএস-এর রিপোর্টটি জনসমক্ষে প্রকাশ করবে না রেল। এই বিষয়ে এক রেল আধিকারিক বলেন, 'আমরা এখনই এই রিপোর্টের বিশদ জনসমক্ষে প্রকাশ করব না। এই ঘটনার ক্ষেত্রে অপর একটি স্বতন্ত্র তদন্ত চলছে। এই রিপোর্ট যাতে সেই তদন্তকে কোনও ভাবে প্রভাবিত না করে, তার জন্যই রিপোর্টের বিশদ প্রকাশিত করা হবে না এখন। ওই তদন্ত শেষ হলে আমরা দুটি রিপোর্টকি একসঙ্গে রেখে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছব। তখন যে পদক্ষেপ করার করব।'
প্রসঙ্গত, গত ২ জুন সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ বালাসোর জেলার বাহানগা বাজার রেল স্টেশনের কাছে আপ শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়ে যায়। দুর্ঘটনার তীব্রতা এতই ছিল যে যাত্রীবাহী ট্রেনটির ইঞ্জিন উঠে যায় এক মালগাড়ির ওপর। ট্রেনের অধিকাংশ বগি ছিটকে পড়ে পাশের লাইনে। এই সময় উলটো দিক থেকে আসা যশবন্তপুর-হাওড়া হামসফর এক্সপ্রেসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে করমণ্ডলের লাইনচ্যুত বগিগুলিতে। এর আগে এই দুর্ঘটনা নিয়ে একটি প্রাথমিক রিপোর্টও জমা দিয়েছিল সিআরএস। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, সিগন্যালিং কন্ট্রোল রুমের ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে যে ভুল লাইনে ঢুকে পড়ে আপ ১২৮৪১ শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। এই মারাত্মক ভুলের কারণেই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। এই লুপ লাইনে করমণ্ডল এক্সপ্রেসটা না ঢুকলেই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। এই পরিস্থিতিতে অটোমেটিক ব্যবস্থায় ত্রুটি ছিল না বলে দাবি উঠছে। পাশাপাশি জেনে বুঝেই ম্যানুয়ালি এই ব্যবস্থাকে বাইপাস করা হয়েছে বলেও দাবি উঠেছে। তবে সিআরএস রিপোর্টে এই সবের কোনও উল্লেখ রয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।