বালাসোরে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনার প্রায় এক মাস হতে চলল। সেই ট্রেন সংঘর্ষের তদন্তে নেমেছে সিবিআই। রেলের তরফেও পৃথক ভাবে তদন্ত করা হচ্ছে এই দুর্ঘটনার। এরই মাঝে এবার দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে অপসারণ করা হল তাঁর পদ থেকে। এই পদে এতদিন আসীন ছিলেন অর্চনা যোশী। তবে এবার তাঁর বদলে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার করা হয়েছে অনিল কুমার মিশ্রকে। ক্যাবিনেটের নিয়োগ কমিটি অনিলের নিয়োগকে সবুজ সংকেত দেখিয়েছে। (আরও পড়ুন: কার ভুলে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা? রিপোর্ট জমা দিল রেল সুরক্ষা কমিশনার)
গত ২ জুন ওড়িশার বালাসোর জেলার বাহানগা বাজার স্টেশনে ভয়াবহ দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। সেই দুর্ঘটনার নেপথ্যে কোনও নাশকতা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে সিবিআই-কে। এই আবহে বিগত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। তদন্ত চলাকালীনই খোরদা রোডের ডিভিশনাল রেল ম্যানেজার এই দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে দাবি করেছিলেন, ইচ্ছে করে কেউ সিগন্যাল না বদলালে দুর্ঘটনা সম্ভব হত না। তাঁর বক্তব্য, মেন লাইনে সবুজ সংকেত ছিল। সব কিছু ঠিক থাকলে তবেই সবুজ সংকত ফুটে উঠবে সিগন্যাল ব্যবস্থায়। যদি সব ঠিক না থাকা সত্ত্বেও সংকেত সবুজ হয়, এর অর্থ, কেউ নিশ্চয় ইচ্ছে করে ম্যানুয়াল উপায়ে কিছু বদলেছে। এই চাঞ্চল্যকর দাবির মাঝেই সিবিআই তদন্তকারীদের নজর গিয়ে পড়ে বালাসোরের সোরো সেকশনের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারের ওপর। এদিকে এই দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে বাহানগার অ্যাসিস্টেন্ট স্টেশন মাস্টার এসবি মহান্তি এবং আরও চার রেলকর্মীকেও জেরা করেছিল সিবিআই।
এর আগে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পরই রেলের তরফেও তদন্ত কমিটি গঠব করা হয়েছিল। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে একটি প্রাথমিক রিপোর্টও পেশ করা হয়। তাতে বলা হয়, বাহানগা স্টেশনের সিগন্যাল মেন লাইনের জন্য দেওয়া ছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেসকে। তবে ১৭এ পয়েন্ট লুপ লাইনের জন্য 'সেট' করা হয়েছিল। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, ডেটাব্লগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যবেক্ষণ করে দেখা গিয়েছে যে ১৭এ পয়েন্টটি মেনলাইনের দিকেই ছিল এবং সেটি লুপ লাইনের জন্য 'সেট' করা ছিল না। দাবি ওঠে, মেন লাইনে সবুজ সিগন্যাল দেওয়া থাকলেও পয়েন্ট লুপ লাইনের জন্য সেট করা যায় না। উল্লেখ্য, করমণ্ডলকে পাস করানোর জন্য বাহানগার বাইরে লুপ লাইনে দাঁড় করানো ছিল মালগাড়ি। করমণ্ডলের যাওয়ার কথা ছিল মেন লাইন দিয়ে। তবে করমণ্ডল লুপ লাইনে ঢুরে পড়ায় বিপত্তি ঘটে।