সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে তীব্র লড়াইয়ের মধ্যেই সুদান থেকে ভারতীয় নাগরিকদের উদ্ধারের অভিযান শুরু করা হল সোমবার। যুদ্ধ বিধ্বস্ত সুদান থেকে নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার অভিযানের নাম - 'অপারেশন কাবেরী'। প্রসঙ্গত, সুদানের গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতির মধ্যে আটকে পড়েছিলেন বহু ভারতীয়। এখনও পর্যন্ত সেদেশে মৃত্যু হয়েছে এক ভারতীয়র। এই আবহে সেই দেশে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে আসা এক বড় চ্যালেঞ্জ। এরই মধ্যে গতকাল থেকে শুরু হওয়া অপারেশন কাবেরীর অধীনে প্রায় ৫০০ ভারতীয়কে সুদান বন্দরে সরিয়ে আনা সম্ভব হয়। সুদান বন্দরে মোতায়েন রয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ। সেই জাহাজে করেই ভারতীয়দের সুদান থেকে দেশে ফেরানো হবে।
সরকারি তথ্য বলছে, গৃহযুদ্ধের আগে সুদানে প্রায় ২৮০০ জন ভারতীয় নাগরিক ছিলেন। এদিকে সুদানে ১২০০ ভারতীয় বংশোদ্ভূত থাকেন। এরা প্রায় ১৫০ বছর ধরে বংশানুক্রমে সেখানে থাকেন বলে জানা গিয়েছে। এই আবহে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরবের বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। পরে সুদানে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধার অভিযানের বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। নৌসেনার প্রধান আর হরিকুমার ও বায়ুসেনার প্রধান বি আর চৌধুরী এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। মিশর ও সৌদির রাষ্ট্রদূতরাও উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে। এদিকে হিসেব বলছে, গতকাল পর্যন্ত এই সংঘর্ষে অন্ততপক্ষে ৪২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩,৭০০ জন। আমেরিকা জানিয়েছে, দুই পক্ষই আগামী ৭২ ঘণ্টার জন্য সংঘর্ষ বিরতিতে সম্মত হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রায় ১০ দিন আগে সুদানে সেনার সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে সেদেশের আধাসামরিক বাহিনীর। এই সংঘর্ষে গতকাল পর্যন্ত তিনজন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সেদেশের চিকিৎসক ইউনিয়ন। খারতুম বিমানবন্দরেও এক সাধারণ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে গৃহযুদ্ধের মাঝে আধা সামরিক বাহিনী দাবি করে, বিমানবন্দর এবং রাষ্ট্রপতি ভবন দখল করেছে তারা। যদিও সেনা সেই দাবি নাকচ করে দেয়। জানা গিয়েছে, এই সংঘর্ষের মূলে রয়েছে সামরিক নেতা আবদেল ফাত্তাহ আল বুরহান এবং তাঁর অধীনস্থ আধাসামরিক কমান্ডার মহম্মদ হামদান দাগলোর বিবাদ। আধাসামরিক বাহিনীর র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সকে (আরএসএফ) সেনার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া নিয়ে এই বিবাদ শুরু হয় বিগত কয়েক সপ্তাহ আগে। সেই বিবাদের জেরেই শনিবার থেকে একে অপরের বিরুদ্ধে বন্দুক তুলে নিয়েছে সেনা ও আধাসামরিক বাহিনী।