গ্রাহকদের স্বার্থে পণ্যের দামের উপর কর ছাঁটাই করতে নারাজ কেন্দ্র। অতিমারীর মোকাবিলা এবং অর্থনীতি চাঙ্গা করার জন্য এই সিদ্ধান্ত, মঙ্গলবার জানিয়েছেন এক সরকারি আধিকারিক।
ভারতে আমদানি করা অপরিশোধিত তেলের দাম কিছু কমলেও মঙ্গলবার দিল্লিতে পেট্রলের দাম লিটারপিছু ৮৫ টাকা অতিক্রম করেছে। গত ৭ জানুয়ারি থেকে দুই সপ্তাহেরও কম সময়ে এই নিয়ে পঞ্চম বার দাম বাড়ল পেট্রলের।
কেন্দ্রীয় সরকারের ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘এই মুহূর্তে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার ৪.৫৯%, যা গত ১৫ মাসের হিসেবে নিম্নতম। এই কারণে জ্বালানির দাম কমানোর জন্য কেন্দ্রীয় বাজেট ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাইছে প্রশাসন। যদিও এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ভারপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষই।’
গ্রাহক মূল্য সূচকের (Consumer Price Index) গণনা অনুযায়ী, গত অক্টোবর মাসে ভারতে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার গত ৭৭ মাসের হিসেবে উচ্চতম ৭.৬% হারে পৌঁছয়। নভেম্বরে তা কমে ৬.৯% হলেও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নির্দিষ্ট মিডিয়াম টার্ম টার্গেট ৪% এর তুলনায় যথেষ্ট বেশি। তবে ডিসেম্বর মাসে মূলত খাজ্য দ্রব্যের দাম কমার কারণে এই হার আরও কমে দাঁড়ায় ৪.৫৯%।
মঙ্গলবার দিল্লিতে পেট্রল ও ডিজেলের দাম প্রতি লিটারে ২৫ পয়সা বৃদ্ধি পায়, যার জেরে পাম্পে পেট্রল ও ডিজেলের দাম দাঁড়ায় যথাক্রমে ৮৫.২০ টাকা ও ৭৫.৩৮ টাকা প্রতি লিটার। মুম্বইতে প্রতি লিটার পেট্রল ও ডিজেলের দাম দাঁড়ায় যথাক্রমে ৯১.৮০ এবং ৮২.১৩ টাকা। উল্লেখ্য, স্থানীয় শুল্কের কারণেই দেশজুড়ে পেট্রল ও ডিজেলের দামে তফাৎ দেখা যায়।
ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন (IOC) জানিয়েছে, গত ৭ জানুয়ারির পর থেকে চার দফায় প্রতি দিন ২৫ পয়সা বাড়িয়ে পেট্রল ও ডিজেলের দাম প্রতি লিটারে ১ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
সরকারি হিসেব অনুযায়ী, ৭ জানুয়ারি ভারতে অপরিশোধিত তেলের গড় আমদানি সূল্য ছিল প্রতি ব্যারেল ৩,৯৭৭.১৮ টাকা। সেই সময় দিল্লিতে পেট্রলের দাম দাণড়ায় প্রতি লিটার ৮৪.২০ টাকা, যা ২৭ মাস পরে সর্বকালীন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আর এক সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, তেল বিপণন সংস্থাগুলি পেট্রল ও ডিজেলের দাম ধার্য করার অধিকার ভোগ করে। আন্তর্জাতিক সীমারেখা অনুযায়ী তারা জ্বালানির দৈনিক বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করে, তবে তার সঙ্গে আন্তর্জাতিক স্তরে অপরিশোধিত তেলের দামের সম্পর্ক থাকে না। ভারতীয় পরিশোধকদের মতে, তেল পরিশোধনের খরচ অপরিশোধিত তেলের থেকে প্রায় ৯০% বেশি।
ভারতের সরকারি জ্বালানি বিপণন সংস্থা আইওসি, ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেড (BPCL) এবং হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেড (HPCL) এই বিষয়ে মন্তব্য করেত চায়নি। মনে রাখা দরকার, দেশে জ্বালানি বিক্রির ক্ষেত্রে একচেটিয়া অধিকার রয়েছে এই তিন সংস্থার।