'মহামূল্যবান' ফোন পড়ে গিয়েছিল জলে। তারপর রিজার্ভারের জলের মধ্যে থেকে সেই ফোন তুলতে ২১ লক্ষ লিটার জল ছেঁচে ফেলে দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছিলেন সরকারি অফিসার। ছত্তিশগড়ের কনকন জেলার এই কাণ্ডে কাঠগড়ায় ছিলেন সরকারি অফিসার রাজেশ কুমার বিশ্বাস। পেশায় ফুড ইনসপেক্টর এই সরকারি অফিসারকে সেই ঘটনায় সেচদফতর জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিল।
সেচ দফতর রাজেশ কুমার বিশ্বাসকে ৫৩,০৯২ টাকা জমা দিতে বলেছে। এরমধ্যে ১০ হাজার টাকা জরিমানা। ছত্তিশগড়ের সেচ দফতরের তরফে যে নির্দেশ এসেছে, তাতে 'ছত্তিসগড় ইরিগেশন অ্যাক্ট'-এর কথা বলা হয়েছে। সেই অ্যাক্টের অধীনে ওই অফিসারকে সাফ বলা হয়েছে, তিনি যে কাণ্ড ঘটিয়েছেন তা বিধি লঙ্ঘনের শামিল। কোনও অনুমতি ছাড়া রিজার্ভার থেকে জল ডিজেল চালিত যন্ত্রে পাম্প করে তোলা আইনত অপরাধ। উল্লেখ্য, কঙ্কর জেলার ফুড ইনসপেক্টর রাজেশ কুমার বিশ্বাস। তিনি তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে গিয়েছিলেন পারালকোট রিজার্ভারে। সেখানে তাঁর হাত ফসকে গিয়ে রিজার্ভারের জলে পড়ে যায় ফোন। ফোনটি ছিল স্যামসং গ্যালাক্সি এস ২৩। যার বাজার মূল্য ৯৫ হাজার টাকা। ফোন জলে পড়ে যেতেই সঙ্গে সঙ্গে রিজার্ভার থেকে পাম্প করে ফোন তোলার নির্দেশ দেন তিনি। চলে আসে যন্ত্র, লোকজন। ডিজেল চালিত পাম্প মেশিন দিয়ে জল তোলা হয়। ২১ লাখ লিটারের জল নষ্ট হয়ে বাইরে যায়। চারদিন ধরে এই জল পাম্প করা হয়। এই জল এলাকার সেচের জন্য মজুত ছিল। এছাড়াও ওই জল আশপাশের গ্রামবাসীদের গ্রীষ্মের প্রবল যন্ত্রণা থেকে মুক্তির একটি পছ ছিল। সেই জল, লাখ টাকার ফোন খুঁজতে গিয়ে পাম্প করে তুলে ফেলে নষ্ট করার অভিযোগ রয়েছে রাজেশ কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য, পারালকোট রিজার্ভারকে অনেকেই খেলকাট্টা চেক ড্যাম হিসাবেও চেনেন। ১৯৬৬ সাল এই বাঁধের কাজ শুরু হয়েছিল। তা কার্যকরি হয় ১৯৮১ সাল থেকে। ৯,৭১৭ হেক্টর এলাকায় এই রিজার্ভার থেকে যায় সেচের জল। সেচ দফতর বলছে, সরকারি ওই অফিসারের ‘ব্যক্তিগত স্বার্থে তিনি ৪,১০৪ কিউবিক মিটার জল নষ্ট করেছেন। তার জন্য তাঁকে প্রতি ১০.০৫ কিউবিক মিটার জলের নিরিখে ৪৩,০৯২ টাকা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়াও জরিমানায় ১০ হাজার টাকা দিতে বলা হয়েছে, কারণ তিনি অনুমতি ছাড়া এই জল পাম্প করেছেন।’ যদিও এই জরিমানা ও নির্দেশের বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি বিশ্বাস।