উত্তরপ্রদেশে কৃষকদের ‘পিষে খুনের’ ঘটনায় ক্রমশ বাড়ছে ক্ষোভের মাত্রা। প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন কৃষক এবং বিরোধী নেতারা। তারইমধ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির ছেলের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। চাপানো হয়েছে খুনের ধারা। একনজরে দেখে নিন লখিমপুর খিরি নিয়ে সাম্প্রতিক আপডেট -
১) কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির ছেলের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। কৃষকদের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তিকোনিয়া থানায় তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা (খুন), ১২০ বি ধারা (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) এবং ১৪৭ ধারায় (হিংসা) মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এএফআইআরে টেনির ছেলের কয়েকজন সঙ্গীরও নাম আছে।
২) লখিমপুরে জেলা প্রশাসন এবং পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করছেন কৃষক নেতারা। সরকারের তরফে আছেন অতিরিক্ত মুখ্যসচিব দেবেশ চতুর্বেদী। কৃষকদের দাবি, অজয়কে পদত্যাগ করতে হবে। অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে অজয়ের ছেলে এবং তাঁর সঙ্গীদের। মৃত চার কৃষকদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সেইসঙ্গে পরিবারের এক সদস্যকে দিতে হবে সরকারি চাকরি।
৩) লখিমপুর খিরিতে আছেন ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের (বিকেইউ) মুখপাত্র রাকেশ তিকাইত।
৪) গৃহবন্দি করা হয়েছিল সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ যাদবকে। তিনি লখনউয়ের বাসভবন থেকে বেরিয়ে ধরনায় বসেন। এবার তাঁকে এবার নিজেদের হেফাজতে নিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তাঁকে পুলিশের গাড়িতে তুলে ইকো গার্ডেনের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
৫) কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরাকে আটক করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তবে কংগ্রেসের এক নেতার দাবি, লখিমপুর খিরি যাওয়ার পথে সোমবার ভোরের দিকে প্রিয়াঙ্কাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কী হয়েছিল লখিমপুর খিরিতে?
রবিবার লখিমপুর খিরিতে বিকেলের দিকে যখন কৃষকরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, তখন একটি গাড়ি তাঁদের পিষে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। লখনউয়ে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ সদর দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সেই ঘটনায় চার কৃষক-সহ আটজনের মৃত্যু হয়েছে। চারজন ওই গাড়িতে ছিলেন। লখিমপুর খিরির জেলা সদর থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে তিকোনিয়া নামে যে জায়গায় সেই ঘটনা ঘটেছে, সেখানে হিংসার আশঙ্কায় এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাঠানো হয়েছে তিন কোম্পানি আধা-সামরিক বাহিনী। জেলায় আংশিকভাবে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।
'হিন্দুস্তান টাইমস' গ্রুপের 'লাইভ হিন্দুস্তান'-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, রবিবার লখিমপুর খিরি জেলায় উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্যের একটি অনুষ্ঠান ছিল। তাঁকে কালো পতাকা দেখানোর জন্য অনেক কৃষক জমায়েত শুরু করেন। নয়া কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে থাকেন। কিন্তু পুলিশ এবং বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে তাঁদের বচসা শুরু হয়ে যায়। তিকোনিয়ার এক পুলিশকর্মী জানিয়েছেন, বনবীরপুর গ্রামে উত্তরপ্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী আসার কয়েক মিনিট আগে ধুন্ধুমার বেঁধে যায়। তিকোনিয়া-বনবীরপুর রোডে দুটি গাড়ি বিক্ষোভরত কৃষকদের পিষে দেয়। গাড়িতে বিজেপির পতাকা লাগানো ছিল বলে একটি মহল থেকে দাবি করা হয়েছে। একটি মহলের দাবি, আদতে ওই গাড়ি চালাচ্ছিলেন বিজেপি সাংসদের ছেলে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন টেনি।