বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই জাতীয় রাজনীতিতে ঝড় উঠেছে মহুয়ার 'টাকার বদলে প্রশ্ন' বিতর্কে। তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে প্রথম এই অভিযোগ তুলেছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। এই আবহে আগামী ৩১ অক্টোবর সংসদের নীতি কমিটির তরফে তলব করা হয়েছে মহুয়াকে। তবে মহুয়া জানান, তিনি সেদিন দিল্লিতে থাকবেন না। আর এরই মাঝে গতরাতে ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে নিশিকান্তকে আক্রমণ শানান মহুয়া। তাঁকে 'ঝাড়খণ্ডি পিটবুল' আখ্যা দেন মহুয়া। (আরও পড়ুন: 'হিরানন্দানির কাছে আমার লগইন আছে', বললেন মহুয়া, নিয়েছিলেন লিপস্টিক, মেকআপ…)
এই বিতর্ক প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে গতকাল মহুয়া বলেন, 'তাঁরা ভুল মানুষের সঙ্গে ঝামেলা করতে এসেছে। আমি আমার জীবনের সবকিছু ছেড়ে দিয়ে এখানে এসেছি। আর কোনও ঝাড়খণ্ডি পিটবুল এবং প্রাক্তন ব্যক্তিগত সম্পর্ক আমার শেষ ডেকে আনতে পারে না। আমি সত্যিটা খুঁজে বের করতেই থাকব। ২০২৪ সালে কী হবে, তা দেখতে পারবেন সবাই।' এদিকে 'পিটবুল' আক্রমণের জবাব দিয়েছেন নিশিকান্ত। তিনি অভিযোগ করেন, তাঁকে পিটবুল ডেকে গোটা বিহার এবং ঝাড়খণ্ডকে অপমান করেছেন মহুয়া।
এদিকে ৩১ অক্টোবর এথিক্স কমিটি তলব করেছে সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে। কিন্তু তিনি সেদিন সংসদে হাজির থাকবেন না বলে জানিয়ে একটি চিঠি লিখেছিলেন মহুয়া। তাতে নিশিকান্তের পদবি ‘দুবে’র বদলে ‘দুবাই’ লেখা হয়। তা নিয়ে মহুয়াকে কটাক্ষ করেছিলেন নিশিকান্ত। এই নিয়ে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে নিশিকান্ত লেখেন, 'অভিযুক্ত সাংসদ দুবাইয়ের প্রতি এতটাই আসক্ত যে, এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যানকে লেখা চিঠিতে আমার নাম বদলে ‘দুবাই’ করে দেওয়া হয়েছে। এতে তাঁর মানসিক অবস্থার পরিচয় পাওয়া গিয়েছে। হায় রে কপাল।' অপর একটি পোস্টে নিশিকান্ত লেখেন, 'দুবাই দিদি কয়েকজনকে পালটা জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলেছেন। লোকসভার নিয়মের অধীনে, বিশেষ করে কউল-শকধর বইটির ২২৬ নম্বর পাতায় বলা আছে, সাক্ষীরা আইন-আদালত থেকে সুরক্ষিত। তবে দুবাই দিদি যা বলেন তাই ঠিক। জাতীয় নিরাপত্তা ও দুর্নীতি নিয়ে জবাব দরকার। এখানে তো যুদ্ধের মতো প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।'
এদিকে গতকাল সাক্ষাৎকারে মহুয়া জানান, তিনি হিরানন্দানির থেকে দুবাইয়ের লিপস্টিক, আইশ্যাডো, স্কার্ফের মতো মামুলি জিনিসই নিয়েছিলেন। মহুয়া বলেন, 'হিরানন্দানির কাছে আমার সাংসদ লগইন আইডি আছে। তবে এনআইসি লগইনের এমন কোনও নিময় নেই যে অন্য কাউকে তা দেওয়া যাবে না। সংসদের কাছে সেই সব প্রশ্ন আসে। কোনও সাংসদই নিজে সব প্রশ্ন করে না। তাঁর বৃহত্তর দলের কাছে এই আইডি থাকে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আমি বিদেশিকে দিয়েছিল লগইন আইডি। হিরানন্দানি আমার বন্ধু ছিলেন। এবং তিনি ভারতীয়। তাঁর পাসপোর্ট ভারতীয়। আমি নিজে সুইৎজারল্যান্ডে থাকাকালীন লগইন করেছি। আমার দিদির সন্তান কেমব্রিজ থেকে লগইন করেছে। সেখানে আমার হয়ে সে প্রশ্ন টাইপ করে দিয়েছে। এনআইসি-র পোর্টাল যদি এতই সুরক্ষিত ছিল, তাহলে অন্য আইপি অ্যাডরেস থেকে লগইন করার ক্ষেত্রে তা ব্লক করে দেওয়া উচিত।' এদিকে মহুয়া বলেন, 'আমি আগেও আদানিকে নিয়ে প্রশ্ন করছিলাম। ভবিষ্যতেও তাই করে যাব।'