প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছিল। তবে সেই বৈঠকের সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই বলে দাবি কার হয়েছে দুই দলের তরফেই। নবান্নে সূত্রে আগেই জানানো হয়েছিল, রাজ্যের বকেয়া অর্থ আদায়ের জন্যই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন মমতা। এই আবহে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে গত শুক্রবার একটি চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই চিঠির কিছু বাক্যে মমতার ‘সুর নরম’ হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে বলে দাবি।
রাজ্য সরকারের দাবি, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প, জিএসটি ক্ষতিপূরণ সহ একাধিক খাতে ১ লক্ষ ৯৬৮ কোটি টাকা প্রাপ্য বাংলার। এর মধ্যে বিভিন্ন প্রকল্প বাবদ বকেয়া অর্থের পরিমাণ ১৭,৯৯৬ কোটি টাকা। এই টাকা চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা একটি চিঠি দেন প্রধানমন্ত্রীকে। সেই চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘কেন্দ্রের সমস্ত নির্দেশিকা মেনে চলছে রাজ্য।’ এই কথায় মনে করা হচ্ছে, প্রকল্পের নাম নিয়ে রাজ্য নিজের অনড় অবস্থান ত্যাগ করছে। বঙ্গ বিজেপির অভিযোগ ছিল, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদলে বাংলার নামে রাখা হচ্ছিল। এর জেরেই আটকে গিয়েছিল রাজ্যের বকেয়া অর্থ। এখন মমতা ‘সব নির্দেশ’ মানার কথা বলছেন।
এর আগে বঙ্গ বিজেপির অভিযোগ, মোট সাতটি কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদল করেছে রাজ্য সরকার। ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা’র নাম বদল করে ‘খাদ্যশ্রী’ নামে চালাচ্ছে রাজ্য। ‘প্রধানমন্ত্রী জল যোজনা মিশনে’র নাম বদলে করা হয়েছে ‘জলস্বপ্ন’। ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’র নাম বদলে প্রকল্পের নাম রাখা হয়েছে ‘বাংলা আবাস যোজনা’। ‘প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা’ নাম বদলে করা হয়েছে ‘বাংলা গ্রাম সড়ক যোজনা’। এদিকে ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযানে’র নাম রাখা হয়েছে ‘নির্মল বাংলা’। এছাড়া ‘ওয়াটার শেড ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামে’র নাম হয়েছে ‘জল ধরো, জল ভরো’ এবং ‘ন্যাশনাল রুরাল লাইভলিহুড মিশন’ হয়েছে ‘আনন্দধারা’। এই নাম বদলের জেরে চাপে পড়েছিল রাজ্য সরকার। রাজনৈতিক ভাবে অবশ্য, তৃণমূল কংগ্রেস সেই সময় নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকার বার্তা দিয়েছিল। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, প্রকল্পগুলির নাম ‘বাংলা’র নামেই থাকবে। তবে দিল্লিতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুর নরম করলেন।