দেশে উৎসবের মরশুম আসছে, বাড়বে আমজনতার খরচা। সেজন্য ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা’-র মেয়াদ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই প্রকল্পের আওতায় দেশের ৮০ কোটির বেশি মানুষ মাসে বিনামূল্যে পাঁচ কেজি গম বা চাল এবং এক কেজি ডাল পাবেন।
জাতির উদ্দেশে ভাষণে আর কী কী বলেছেন মোদী, দেখে নিন একঝলকে :
১) আমরা এখন আনলক-২ পর্যায়ে প্রবেশ করছি। বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে। আমরা এমন একটা মরশুমে প্রবেশ করছি, যখন সর্দি, কাশি এবং অজানা জ্বর হয়।
২) সব দেশবাসীর কাছে প্রার্থনা, এই সময়ে নিজের খেয়াল রাখুন। করোনায় মৃত্যুর হার দেখলে বিশ্বের অনেক দেশের ভারতের অবস্থা অনেক ভালো। সময়োচিত লকডাউনের কারণে পরিস্থিতি ভালো আছে।
৩) যখন থেকে দেশে লকডাউন শুরু হয়েছে, তখন থেকে ব্য়ক্তিগত এবং সামাজিক স্তরে দায়িত্বজ্ঞানহীনতা বাড়ছে। আগে আমরা মাস্ক পরা, দু'গজ দূরত্ব মেনে চলা, দিনে একাধিকবার ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়ার মতো বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক ছিলাম। লকডাউনের সময় কঠোরভাবে নিয়ম পালন করা হয়েছিল। এখন সরকার, স্থানীয় প্রশাসন এবং দেশবাসীদের ফের সেইরকম সতর্কতা দেখাতে হবে।
৪) জনসমক্ষে মাস্ক পরে না যাওয়ায় একটি দেশের প্রধানমন্ত্রীকে (বুলগেরিয়ার প্রধানমন্ত্রী) ১৩,০০০ টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনকেও এরকমভাবে কাজ করতে হবে। এটা ১৩০ কোটি দেশবাসীর জীবন রক্ষার অভিযান। ভারতে গ্রামের প্রধান হোন বা দেশের প্রধানমন্ত্রী - কেউই নিয়মের উর্ধ্বে নন।
৫) সময়মতো এবং বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কোনও দেশ বা ব্যক্তি সিদ্ধান্ত নিলে যে কোনও সংকটের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাই লকডাউন ঘোষণার পরই সরকার 'প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা' চালু করেছে।
৬) গত তিন মাসে ২০ কোটি গরিব পরিবারের জনধন অ্যাকাউন্টে ৩১,০০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে ন'কোটির বেশি কৃষকের অ্যাকাউন্টে ১৮,০০০ কোটি টাকা জমা করা হয়েছে।
৭) আরও একটি জিনিসে অবাক হয়ে গিয়েছে বিশ্ব। তা হল - ৮০ কোটির বেশি মানুষের বিনামূল্যে রেশন দিয়েছে ভারত। অর্থাৎ করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে পাঁচ কেজি গম বা চাল দেওয়া হয়েছে।
৮) সেদিক দিয়ে দেখলে আমেরিকার জনসংখ্যার থেকে আড়াই গুণ বেশি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হয়েছে। ব্রিটেনের জনসংখ্যার থেকে ১২ গুণ এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দ্বিগুণের বেশি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হয়েছে।
৯) বর্ষায় কৃষিক্ষেত্রে বেশি কাজ হয়। অন্য ক্ষেত্রে কাজের কিছুটা চাপ কম থাকে। তারপর বিভিন্ন উৎসব আসবে। খরচও বাড়বে। গুরু পূর্ণিমা আসবে, ১৫ অগস্ট আসবে, রাখি আসবে, দুর্গাপুজো আসবে, দিওয়ালি আসবে, ছটপুজো আসবে।
১০) তাই প্রধানমন্ত্রী গরিব অন্ন যোজনার মেয়াদ বাড়িয়ে দিওয়ালি এবং ছটপুজোর শেষপর্যন্ত করা হল। অর্থাৎ আগামী নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত করা হল। আরও পাঁচ মাস পর্যন্ত ৮০ কোটি মানুষ প্রতি মাসে ৫ কিলো গম বা চাল বিনামূল্যে পাবেন। পাশাপাশি এক কিলো ডাল পাবেন।
১১) প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনার মেয়াদ বাড়ানোর ফলে বাড়তি ৯০,০০০ কোটি টাকা খরচ হবে। যদি তিন মাসের খরচ যোগ করেন, তাহলে অঙ্কটা প্রায় ১.৫ লাখ কোটি টাকা হবে।