২২ জানুয়ারি রামমন্দিরে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়েছে। গোটা দেশ জুড়ে কার্যত রাম ঢেউ। সেই রাম আবেগে ভেসে যাচ্ছেন অনেকেই। আর এবার রামমন্দিরে প্রাণপ্রতিষ্ঠা উপলক্ষে খড়্গপুর আইআইটিতেও নিরামিষ খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করা হল। সোমবার আইআইটিতে নিরামিষ খাওয়ার দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এখানেই শেষ নয়। জায়েন্ট স্ক্রিনে অযোধ্য়ায় প্রাণপ্রতিষ্ঠার সরাসরি সম্প্রচারও করা হয়। এমনকী ক্যাম্পাসে রামের নামে জয়ধ্বনিও ওঠে। সব মিলিয়ে দেশের প্রতিভাধর পড়ুয়ারা যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে থাকেন সেখানে এসে পড়ল রামের নামে আবেগের ঢেউ।
এদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়েরও রাম মাহাত্ম্য শোনানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে অতি বাম ছাত্রছাত্রীদের দাপটে এই ব্যবস্থা পুরোপুরি কার্যকরী হতে পারেনি। কলকাতা বইমেলাতে পদ্মফুল, রামের নামে লিফলেট বিলি করতে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতা তথা অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা পুলিশ করতে দেয়নি। তবে খড়্গপুর আইআইটির মতো নামী প্রতিষ্ঠানে রামের নামে নিরামিষ ভোজন নিয়ে অবশ্য় কেউ আপত্তি করেননি বলেই খবর।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, খড়্গপুর আইআইটির রাধাকৃষ্ণন হল কাউন্সিলের সভাপতি তথা চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়া মহিম জৈন জানিয়েছেন, পাঁচশো বছর পরে অযোধ্য়ায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠা হচ্ছে। খোদ প্রধানমন্ত্রী যাচ্ছেন। দেশ জুড়ে উৎসব হচ্ছে। আমরাও দিনটি পালনে সর্বসম্মতিক্রমে নিরামিষ খাবারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কেউ আপত্তি করেনি।
কেউ আপত্তি করেনি। তবে এভাবে একেবারে নির্দেশিকা জারি করে নিরামিষ খাবার ভক্ষণকে ঘিরে কিছু কথা তো উঠছেই। কারণ আইআইটিতে যে ভাবে দল বেঁধে রামমন্দিরের প্রাণপ্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানকে উদযাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল তা কার্যত নজিরবিহীন। কারণ আইআইটির মতো প্রতিষ্ঠানে বরাবরই ধর্মনিরপেক্ষতার একটা রীতি পালন করার চেষ্টা চলে।
অর্থাৎ যে কেউ তাঁর মতো করে ধর্মীয় রীতি পালন করতেই পারেন। কিন্তু এভাবে একেবারে নির্দেশিকা জারি করে নিরামিষ খাওয়ানো কথা উল্লেখ করাটা কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।এদিকে খড়্গপুর আইআইটিতে গৈরিকীকরণের চেষ্টা চলছে বলেও বিভিন্ন মহল থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। এভাবে যদি একটা বিশেষ ধর্মমতকে জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হয় তবে সেটা কতটা যুক্তিসম্পন্ন হবে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। তবে সামগ্রিকভাবে রাম আবেগ ছুঁয়ে গেল খড়্গপুর আইআইটিকেও। তিনবেলা নিরামিষ খেলেন পড়ুয়ারা।