মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত এক ব্যক্তিকে অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। কার্যত একটি মুখবন্ধ খাম খোলার পরেই ওই সাজাপ্রাপ্তকে মুক্তি দিল আদালত। কী ছিল সেই খামে?
আদালতের পর্যবেক্ষণ যখন এই অপরাধটি সংগঠিত হয়েছিল তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১২ বছর। বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু, কেএম যোশেফ ও ঋষিকেশ রায়ের বেঞ্চ সোমবার ওই ব্যক্তিকে অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে। বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ ওই ব্যক্তি দাবি করেছিলেন অপরাধ যখন সংগঠিত হয়েছিল তখন তিনি কিশোর ছিলেন। সেটা বাস্তবিকই সত্যি। তার জেরেই তাকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।
সাজাপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তির নাম নারায়ণ চেতনারাম চৌধুরী। তিনি প্রায় ২৮ বছর কারাগারে কাটিয়েছেন। পুনেতে রাঠি পরিবারের হত্যাকাণ্ডে নাম জড়়িয়েছিল তার। পুনেতে দুজন শিশু ও এক গর্ভবতী মহিলাকে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।
এদিকে বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন আদালত জেনেছিল অপরাধের সময় তার বয়স ছিল ২০-২২ বছর। এদিকে মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত হওয়ার পরে চৌধুরী ও তার অপর এক সঙ্গী জিতেন্দ্র নয়নসিং গেহলট রাষ্ট্রপতির কাছে মৃত্যুদণ্ড রদ করার জন্য় প্রার্থনা করেন। এরপর ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে গেহলটের মৃত্যুদণ্ডটা কমিয়ে যাবজ্জীবন করা হয়। অন্যদিকে চৌধুরী রাষ্ট্রপতির কাছে যে চিঠি দিয়েছিলেন সেটা প্রত্যাহার করে নেন। তিনি ফের একটি রিভিউ পিটিশন দাখিল করেন। সেখানে তিনি জানিয়ে দেন অপরাধ যে সময় সংগঠিত হয়েছিল তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১২ বছর। অর্থাৎ তিনি নাবালক ছিলেন।
এদিকে বিগতদিনে তিনি রাজস্থানের একটি স্কুলে পড়তেন। সেই স্কুলের রেকর্ডও তিনি তার দাবির সমর্থনে জমা দেন। তবে ঘটনার সময় তিনি মহারাষ্ট্রে থাকতেন। সেখানকার স্কুলে তিনি দেড় বছর পড়েছিলেন। কিন্তু সেখানকার কোনও প্রমাণ তিনি দিতে পারেননি। তবে আগের স্কুলে ভর্তির রেকর্ড অনুসারে জানা যায় তিনি ঘটনার সময় মাত্র ১২ বছর বয়সী ছিলেন।
২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে সুপ্রিম কোর্ট পুনের জেলা ও নগর আদালতকে জানায় চৌধুরীর বয়স নির্ধারন করতে হবে। এরপর মুখবন্ধ খামে সেই বয়সের প্রমাণপত্র সুপ্রিম কোর্টে পাঠায় পুনের আদালত। এরপর ২০১৯ সালের মে মাসে ভ্য়াকেশান বেঞ্চের বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও সঞ্জীব খান্না ওই মুখবন্ধ খামটি খোলেন। সেখানে দেখা যায় চৌধুরী যে দাবি করছিলেন তা সঠিক। এরপরই দেশের শীর্ষ আদালত সোমবার নির্দেশ দিয়েছে ওই ব্যক্তিকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। কারণ অপরাধ যখন সংগঠিত হয়েছিল তখন সে নাবালক ছিল।