পঞ্চমবারের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে শপথগ্রহণ করেন আওয়ামি লিগের সভাপতি। সঙ্গে শপথগ্রহণ করেন ২৫ জন পূর্ণমন্ত্রী এবং ১১ জন প্রতিমন্ত্রী। অর্থাৎ সবমিলিয়ে ৩৭ জনকে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিন। পরবর্তীতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় যে কোন মন্ত্রীর হাতে কোন দায়িত্ব দিয়েছেন হাসিনা। নিজের হাতে কোন কোন মন্ত্রক এবং বিভাগ রেখেছেন। হাসিনার হাতে কোন কোন দায়িত্ব আছে, কে কোন মন্ত্রক পেলেন এবং বাংলাদেশের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা কী কী সুযোগ-সুবিধা পান, তা দেখে নিন।
শেখ হাসিনার হাতে কোন কোন দায়িত্ব আছে?
১) প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
২) সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ।
৩) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রক।
৪) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রক।
৫) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
বাংলাদেশের কোন মন্ত্রকের দায়িত্ব পেলেন কে? মন্ত্রী হলেন কে?
১) অর্থমন্ত্রী: আবুল হাসান মেহমুদ আলি।
২) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী: আসাদুজ্জামান খান।
৩) বিদেশমন্ত্রী: মহম্মদ হাসান মেহমুদ।
৪) সমাজকল্যাণ মন্ত্রী: দীপুমণি।
৫) শিল্পমন্ত্রী: নুরুল মজিদ মেহমুদ হুমায়ুন।
৬) স্বাস্থ্যমন্ত্রী: সামন্তলাল সেন (টেকনোক্র্যাট)
৭) শিক্ষামন্ত্রী: মহিবুল হাসান চৌধুরী।
৮) মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী: মোজাম্মেল হক।
৯) সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী: ওবায়দুল কাদের।
১০) আইনমন্ত্রী: আনিসুল হক।
১১) রেলমন্ত্রী: মহম্মদ জিল্লুল হাকিম।
১২) খাদ্যমন্ত্রী: সাধনচন্দ্র মজুমদার।
১৩) পরিকল্পনা মন্ত্রী: আবদুস সালাম।
১৪) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী: ইয়াফেস ওসমানকে (টেকনোক্র্যাট)।
১৫) কৃষিমন্ত্রী: মহম্মদ আবদুস শহিদ।
১৬) জনপ্রশাসন মন্ত্রী: ফরহাদ হোসেন।
১৭) যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী: নাজমুল হাসান।
১৮) গৃহ ও পূর্তমন্ত্রী: উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী।
১৯) ভূমিমন্ত্রী: নারায়ণচন্দ্র চন্দ।
২০) বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী: জাহাঙ্গীর কবির নানক।
২১) ধর্মমন্ত্রী: মহম্মদ ফরিদুল হক খান।
২২) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক মন্ত্রী: মহম্মদ আবদুর রহমান।
২৩) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী: সাবের হোসেন চৌধুরী।
২৪) অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী: মহম্মদ ফারুক খান।
২৫) স্থানীয় সরকার মন্ত্রী: মহম্মদ তাজুল ইসলাম।
বাংলাদেশের নয়া প্রতিমন্ত্রীদের তালিকা
১) বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী: আহসানুল ইসলাম।
২) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী: রুমানা আলি।
৩) মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী: সিমিন হোসেন রিমি।
৪) প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী: শফিকুর রহমান চৌধুরী।
৫) জলসম্পদ প্রতিমন্ত্রী: জাহিদ ফারুক।
৬) পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী: কুজেন্দ্রলাল ত্রিপুরা।
৭) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী: জুনাইদ আহমেদ।
৮) তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী: মহম্মদ আলি আরাফাত।
৯) বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী: নসরুল হামিদ।
১০) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী: মহিববুর রহমান।
১১) নৌ পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী: খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
বাংলাদেশের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা কোন কোন সুযোগ-সুবিধা পান?
১) বেতন: বাংলাদেশের নিয়ম অনুযায়ী, একজন পূর্ণমন্ত্রী মাসে ১ লাখ ৫ হাজার বেতন পান। প্রতিমন্ত্রীদের ক্ষেত্রে সেটা ৯২,০০০ টাকা করা হয়েছে।
২) চিকিৎসা সংক্রান্ত ব্যয়: মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রীদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ খরচ বহন করে থাকে বাংলাদেশ সরকার।
৩) বিমান ভাড়া: বছরে কতবার বিনামূল্যে বিমানে যাতায়াত করতে পারবেন, তা নির্দিষ্ট করে বলা নেই। তবে বছরে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিমান ভাড়া দিতে হবে না মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রীদের। অর্থাৎ যতক্ষণ বিমান ভাড়া বাবদ খরচের অঙ্কটা ১০ লাখ টাকা থাকছে, ততক্ষণ মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের গ্যাঁট থেকে কোনও পয়সা খসবে না।
৪) বাসভবন: মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রীদের সরকারি বাসভবন বরাদ্দ করা হয়। কোনও মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী যদি সরকারি বাসভবনের পরিবর্তে ভাড়াবাড়ি বা নিজের বাড়িতে থাকেন, তাহলে তাঁর অর্থ প্রদান করা হয়। মাসে বাড়িভাড়া হিসেবে পূর্ণমন্ত্রীদের ৮০,০০০ হাজার দেওয়া হয়। আর ৭০,০০০ টাকা পান প্রতিমন্ত্রীরা। নিজের বাড়িতে থাকলে বাড়ি সংস্কারের টাকাও প্রদান করা হয়।
৫) বাড়ি সাজানোর ভাতা, বিদ্যুতের বিল, জলের বিল, গ্যাসের বিল: বছরে পাঁচ লাখ টাকা পান মন্ত্রী। প্রতিমন্ত্রীদের ক্ষেত্রে টাকার অঙ্কটা দাঁড়ায় চার লাখ। সেইসঙ্গে মন্ত্রীর বাড়ির বিদ্যুতের বিল, জলের বিল, গ্যাসের বিল বাবদ যা খরচ হয়, সেটার পুরোটাই দেবে বাংলাদেশ সরকার।
৬) ভ্রমণ এবং আপ্যায়ন ভাতা: কোনও মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী যদি বাংলাদেশের কোনও জায়গায় যান, তাহলে তাঁদের ভাতা দেওয়া হয়। মন্ত্রীরা দিনে পান ২,০০০ টাকা। দিনে ১,৫০০ টাকা পান প্রতিমন্ত্রীরা। আপ্যায়ন ভাতা হিসেবে মন্ত্রীদের মাসে ১০,০০০ টাকা দেওয়া হয়। প্রতিমন্ত্রীদের জন্য ৭,৫০০ টাকা বরাদ্দ করা হয়।
৭) একটি সরকারি গাড়ি, মোবাইল ফোন দেওয়া হয় মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রীদের। গাড়ির জন্য তেলের টাকাও দেওয়া হবে। তবে যত জ্বালানি তেল খরচ হবে, সেটা পুরোটা দেওয়া হবে না। দিনে সর্বাধিক ১৮ লিটার তেলের খরচ বহন করবে বাংলাদেশ সরকার।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: যাবতীয় অর্থের হিসাব বাংলাদেশি মুদ্রায়)