কৃষক আন্দোলন চলাকালীন টুইটার কর্তৃপক্ষকে টুইট মুছে ফেলা ও কিছু অ্যাকাউন্ট ব্লক করার বিষয়ে নির্দেশ দেয় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এই নিয়ে বিতর্ক চলছিল নেটপাড়া কিংবা কলেজ ক্যাম্পাসে। উল্লেখ্য, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই টুইটারের প্রাক্তন সিইও জ্যাক ডরসি এক সাক্ষাৎকারে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন। জনপ্রিয় মাইক্রো ব্লগিং সাইটের সহ প্রতিষ্ঠাতা অভিযোগ করেন, ‘কৃষক আন্দোলনের সময়ে মোদী সরকার বিরোধী টুইট মুছে না ফেললে টুইটার বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। সরকারের তরফে টুইটার কর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর হুমকি দেওয়া হয়।!’ কিন্তু বাস্তবে টুইটর কর্তৃপক্ষ বা ডরসির সঙ্গে সম্মুখ সমরে আপাতত এগিয়ে রইল মোদী সরকার।
বিতর্কিত টুইট মুছে ফেলা এবং সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার জন্য কেন্দ্রের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানাতে গিয়ে কর্ণাটক হাইকোর্টে বিরূপ মন্তব্যই শুনতে হল টুইটার কর্তৃপক্ষকে। আজ, শুক্রবার বিচারপতি কৃষ্ণান এস দীক্ষিত টুইটরের আর্জি খারিজ করে দিয়েছেন। এমনকি আদালতের সময় নষ্ট করার জন্য টুইটার কর্তৃপক্ষকে ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।
এপ্রিল মাসের শুনানিতে আদালত ভারত সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিল ঠিক কী কারণে টুইট ব্লক করা হয়েছিল। চলতি মাসের মাঝমাঝি এপ্রসঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন দক্ষতা উন্নয়ন এবং উদ্যোক্তা এবং ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্য প্রযুক্তির বর্তমান প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছিলে, জ্যাকের সময়কালে টুইটার ভারতীয় আইনের সার্বভৌমত্বের বিষয়ে গুরুত্ব দেয়নি। তাদের কার্যকলাপ ভারতের আইনের ঊর্দ্ধে যেতে পারেনা। ভারতে কর্মরত সমস্ত কোম্পানিকেই সেই আইন অনুসরণ করে চলতে হয়। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে কৃষক বিক্ষোভের সময় প্রচুর ভুল তথ্য এবং এমনকি গণহত্যার রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছিল, যেগুলি মিথ্যে ছিল। তাই কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রক এই বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে, এমনটাই টুইট করেছিলেন রাজীব চন্দ্রশেখর।এদিন রায়দানের পরেও টুইট করে খুশি জাহির করেন তিনি। সরকারের সিদ্ধান্ত যে ঠিক ছিল, তাতেই মান্যতা দিয়েছে আদালত, সেটা স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
আজ সরকারের পক্ষেই রায় দিল কর্ণাটক হাইকোর্ট। টুইটর কর্তৃপক্ষকে ভর্ৎসনা করে কোর্ট এই দিন বলে, টুইটার কোম্পানি নিশ্চয়ই কোনও কৃষক বা সাধারণ আইন না-জানা ব্যক্তি নয়। কোর্টের সময় নষ্ট করার জন্য ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা করার পর টুইটার কর্তৃপক্ষই বা কী পদক্ষেপ নেয়, এখন সেটাই দেখার।