গত সপ্তাহে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে রুপিতে বাণিজ্য শুরু হয়েছে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে। এবার বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিবিড় করতে আরও একটি দরজা খুলে গেল দুই দেশের মধ্যে। বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে ত্রিপুরা। সম্প্রতি আগরতলার বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত বিমান চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে সরকারি সূত্রের খবর। দ্রুত চালু করা হবে এই বিমান যোগাযোগ পরিষেবা। কেবল মাত্র আকাশ পথেই নয়, আগরতলা থেকে আখাউড়া হয়ে ঢাকা পর্যন্ত ট্রেন চালানো হবে বলেও সূত্রের খবর। এছাড়াও প্রতিবেশী দেশের সীমান্তে, ত্রিপুরার সাব্রুম পর্যন্ত ডবল লাইন রেলপথ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের দিক থেকেও ভারতের সাথে সার্বিক ভাবে সম্পর্ক মজবুত করার পরিকল্পনা রয়েছে। ভারতের উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলির সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগ আরও দৃঢ় করার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে নতুন চারটি রুট খুলে দিল শেখ হাসিনা সরকার। প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তর পূর্ব ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নততর হবে বলেই আশা করছেন দুই দেশের বাণিজ্য মহল। শেখ হাসিনা সরকারের বিশেষ সূত্র মারফত খবর, ত্রিপুরা-সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির জন্য চট্টগ্রাম বন্দর-আখাউরা-আগরতলা, মংলা বন্দর-আখাউরা-আগরতলা, চট্টগ্রাম-বিবিরবাজার-শ্রীমন্তপুর এবং মংলা বন্দর-বিবিরবাজার-শ্রীমন্তপুর এই চারটি রুট খুলে দেওয়া হয়েছে।
নতুন রুটের অনুমোদন প্রসঙ্গে বাংলাদেশের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী সান্তনা চাকমা বলেন, ভারতের বাণিজ্যিক পণ্য যাতে সহজে আমদানি করার জন্যই নতুন ৪টি রুট চালু করা হল। বাংলাদেশের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'বাংলাদেশে পণ্য পরিবহণের জন্য ভারতীয় ব্যবসায়ীরা চট্টগ্রাম এবং মংলা বন্দর ব্যবহার করতে পারবেন। এই দুটি বন্দরে প্রবেশ করা এবং ব্যবহার করা অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে ভারত ও বাংলাদেশ একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। আমরা উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির সঙ্গে আরও বেশি বাণিজ্য করতে চাইছি। এই জন্য ত্রিপুরা ও উত্তর-পূর্বের অন্যান্য রাজ্য থেকে পণ্য স্থানান্তরের জন্য বাংলাদেশ সরকার চারটি রুট খুলে দিয়েছে।'
দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আশাবাদী ভারত ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক মহল। আরেকটি অভিনব প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে দুই দেশের সম্মতিতে। বাংলাদেশের সীমান্তে আরও বেশ কিছু ‘সীমান্ত হাট’ গড়ে তোলার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশের সীমান্তে ‘জিরো পয়েন্টে’ ওই হাট গুলি নির্মিত হবে। ওই নির্দিষ্ট স্থানে বসে পণ্য বেচাকেনা করতে পারবেন দুই দেশের ব্যবসায়ীরাই। দুই দেশের ক্রেতারাও পাবেন রকমারি পণ্য দেনাকাটার সুযোগ। ত্রিপুরা আর কলকাতার মাঝে বাংলাদেশ অবস্থান করায় এতদিন ভারতের এই দুই রাজ্যের মধ্যে সরাসরি ট্রেন যোগাযোগ সম্ভব ছিল না। এবার ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের রেল যোগাযোগ চালু হলে দ্রুত আগরতলা থেকে কলকাতা আসা যাবে।