তিনটি ট্রেন, দুশোর বেশি মানুষের মৃত্যু, যন্ত্রণায় কাতর আরও বহু, আর এক ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা। ওড়িশার বালাসোরের বাহানাগা বাজারের কাছে রেল দুর্ঘচনার স্মৃতি এখনও দগদগে। এলাকায় স্বজনহারার আর্তনাদের রেশ থেকে আজও বের হতে পারেননি অনেকে। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই ফের এক বড়সড় দুর্ঘটনা এড়ানো গেল। আর এবারেও স্থান সেই ওড়িশার বালাসোরের কাছেই!
ওড়িশার বালাসোরের কাছে নিলগিরি রোড স্টেশনের কাছে এক মেমু ট্রেন দুর্ঘটনা গ্রস্ত হতে চলেছিল। সেই দুর্ঘটনা অল্পের জন্য এড়ানো যায়। আর এই পরিস্থিতির জেরে দুই রেল স্টাফকে সাসপেন্ড করেছে দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ের খড়গপুর ডিভিশন। কর্তব্যে গাফিলতি ও উদাসীনতার দায়ে তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, নিলগিরি রোড স্টেশনের ম্যানেজার সুভাষ শেট্টি, পয়েন্টসম্যান শেখ মহম্মদ খালিপকে এই ঘটনায় সাসপেন্ড করা হয়েছে। জানা গিয়েছে মঙ্গলবার ওড়িশার বালাসোর জেলায় নিলগিরি স্টেশনের কাছে ভদ্রক-বালাসোর মেমু ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়তে যাচ্ছিল। শেষ মুহূর্তে ওই ট্রেন রক্ষা পায় লোকোপাইলটের প্রত্যুৎপন্নমতির জেরে। জানা গিয়েছে, রেল ট্র্যাকের যে অংশে টলছিল মেরামতির কাজ, সেখানে ট্রেন ঢুকে পড়তে যাচ্ছিল।
জানা যাচ্ছে, ভদ্রক-বালাসোর ট্রেনটি সফরকালে ঢুকে পড়ছিল এক লুপ লাইনে। সেই লাইনে চলছিল মেরামতির কাজ। আর সেখানে ঢুকে পড়লে যে বিপত্তির অন্ত থাকত না, তা বলাই বাহুল্য। ট্র্যাকের এন্ডপয়েন্টে গড়বড় বুঝতে পেরে বিপত্তির আঁচ আগেই করেছিলেন লোকো পাইলট। তাঁর তৎপরতাতেই এড়ানো গিয়েছে বিপত্তি। তড়িঘড়ি তিনি ইমার্জেন্সি বরেক লাগান ট্রেনে। পরে তিনি ট্রেনকে বালাসোরের দিকে ঘুরিয়ে নেন। গোটা ঘটনায় দায় গিয়েছে ম্যানেজার ও পয়েন্টস ম্যানের দিকে।
উল্লেখ্য, লাসোরের বাহানগা স্টেশনে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা ঘটেছিল জুন মাসের প্রথমে। দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, সিগন্যালিং এবং টেলিকমিউনিকেশন দফতরের কিছু গলদের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। এদিকে কোনও ব্যক্তি ইচ্ছে করে এই দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে কি না, সেই প্রশ্নের জবাব এই রিপোর্টে দেওয়া হয়নি। আধিকারিক জানান, কোনও অপরাধমূলক ঘটনা ঘটেছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখবে সিবিআই।