বিয়ের প্রতিশ্রুতি না দিলে শুধুমাত্র ‘মজার জন্য’ অবিবাহিত মহিলারা পুরুষদের সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হন না। একটি মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ করল মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের ইন্দোর বেঞ্চ। ‘লিভ ল’-এর প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়েছে।
বিচারপতি সুবোধ অভয়ঙ্করের সিঙ্গল বেঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে, ভারতের সমাজ রক্ষণশীল। কয়েকটি ব্যতিক্রমী ঘটনা ছাড়া তা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায়নি যে অবিবাহিত মহিলারা শুধুমাত্র মজার জন্য পুরুষদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হবেন। যদি না সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতের কোনও প্রতিজ্ঞা বা বিয়ের বিষয়ে আশ্বস্ত না করা হয়। সেইসঙ্গে হাইকোর্ট জানিয়েছে, কোনও মহিলার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের আগে কোনও পুরুষকে বুঝতে হবে যে তাঁর পদক্ষেপের পরিণতি কী হতে পারে। সেই পরিণতি হলে পুরুষকে তার মুখোমুখিও হতে হবে।
যে মামলার প্রেক্ষিতে এমন পর্যবেক্ষণ করেছে হাইকোর্ট, সেই মামলায় দাবি করা হয়, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক ‘কিশোরীকে’ ধর্ষণ করেছেন অভিযুক্ত। সেজন্য ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং পকসো আইনের একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়। সরকারি আইনজীবী দাবি করেন, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে লাগাতার ধর্ষণ করে যাচ্ছেন যুবক। পরে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন। উলটে অন্যত্র ওই যুবকের বিয়ের কথা জানতে পেরে আত্মহত্যা করতে যান ‘কিশোরী’। সৌভাগ্যবশত তিনি বেঁচে গিয়েছেন। যদিও অভিযুক্তের আইনজীবীর দাবি, ঘটনার সময় ‘কিশোরী’ প্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন এবং যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার বিষয়ে সায় দিয়েছিলেন। মেয়ের বাড়ির অমতেই দু'জনে বিয়েও করেছিলেন। কিন্তু দু'জনে ভিনধর্মের হওয়ায় যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে।
সেই শুনানির পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি জানান, অধিকাংশ ধর্ষণের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে অভিযুক্তরা দাবি করেন, মহিলার সম্মতিতে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ‘বেনিফিট অফ ডাউট’-এর সুবিধা পান অভিযুক্তরা। তবে সংশ্লিষ্ট মামলায় বিচারপতির মতে, 'কিশোরী' যে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছেন, তা থেকে মনে হচ্ছে যে তিনি সম্পর্কের বিষয়ে সিরিয়াস ছিলেন। এটা বলা যায় যে শুধুমাত্র মজার জন্য সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েননি। তাই অভিযুক্তের জামিন খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।