চৈত্র নবরাত্রি শুরু হয়েছে। চৈত্র নবরাত্রিতে শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে পুজো করা হয় মা অন্নপূর্ণার। মা অন্নপূর্ণাকে সমৃদ্ধির দেবী বলা হয়ে থাকে। বাংলার ঘরে ঘরে পরিবারের সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনার জন্য দেবী অন্নপূর্ণার পুজো করা হয়। কাশিতে বিশ্বনাথের দর্শন করার সময় অবশ্যই পুজো দিতে হয় মা অন্নপূর্ণার। বলা হয়ে থাকে বাবা বিশ্বনাথ কাশি ধামের নির্মাণকর্তা আর মা অন্নপূর্ণা হলেন কাশি ধামের অধিষ্ঠাত্রী দেবী।
এবছর অন্নপূর্ণা পুজো ১৬ই এপ্রিল ২০২৪ মঙ্গলবার। ঐদিন পড়েছে চৈত্র নবরাত্রির অষ্টমী তিথি। ওইদিন সারা বাংলায় পালিত হয় বাসন্তী পুজো, বাসন্তী পুজোর অষ্টমী তিথিতে মা অন্নপূর্ণার পুজো করা হয়।
রায়গুনাকর ভারতচন্দ্রর লেখা অন্নদামঙ্গল কাব্যে মা অন্নপূর্ণার মাহাত্ম্যের কথা উল্লেখ রয়েছে। শোনা যায় বাংলায় প্রথম নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় দেবী অন্নপূর্ণার পুজোর প্রসারে প্রথম অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। মা অন্নপূর্ণা হলেন সমৃদ্ধির দেবী, তার কাছে হাত পেতে ভিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন স্বয়ং ভোলেনাথ।
এ নিয়ে একটি পৌরাণিক কাহিনিও প্রচলিত আছে। শিব গৌরীর সংসারে একবার প্রচন্ড কলহ লাগে। মা পার্বতী ভোলানাথের উপর রেগে গিয়ে ঘর সংসার ত্যাগ করে মর্ত্যে ফিরে এসেছিলেন। মা ছাড়া শিবের সংসার হয়েছিল অচল। কিন্তু ভোলেনাথ জেদ ধরেছিলেন যে মা ছাড়াও তিনি সংসার চালিয়ে নিতে পারবেন, তাই বের হয়েছিলেন ভিক্ষা করতে। কিন্তু সেই সময় চলছিল দুর্ভিক্ষ। অনেক খোঁজ করেও তিনি অন্নের জোগাড় করতে পারেননি।
সেই সময় তিনি শোনেন যে কাশিতে একজন সকলকে খাওয়াচ্ছে, তিনি গিয়ে সেখানে উপস্থিত হন এবং দেখেন মা অন্নপূর্ণা তার সমস্ত ভক্তদের নিজের ঝুলি উজাড় করে অন্নের ব্যবস্থা করেছেন। ভোলেনাথ মা অন্নপূর্ণাকে ওখানেই চিনতে পারেন। বুঝতে পারেন নিজের ভুল এবং ঝুলি পেতে মায়ের কাছে ভিক্ষা চান। তাই আজও প্রতিকী ছবি হিসাবে ভোলানাথ দেবী অন্নপূর্ণার কাছে ভিক্ষা চাইছেন এই রূপেই তিনি বাংলার ঘরে ঘরে পূজিত হন।