মকর সংক্রান্তির সময়ে অনেকেই গঙ্গাসাগরে যেতে চান। এই সময়ে সারা দেশ থেকে বহু মানুষ হাজির হন সাগরের মেলায়। পুজো দেন কপিলমুনির মন্দিরে। ফলে ভিড় হয় যারপরনাই।
এ তো গেল, ওখানকার বিষয়। কিন্তু বাড়ি থেকে যাবেন কীভাবে? এই বিষয়টি অনেকেই ভালো করে জানেন না। অনেকে আবার ভাবেন, গঙ্গাসাগরে যেতে হয়তো অনেক খরচও হতে পারে। কিন্তু বিষয়টি একেবারেই তা নয়। কম খরচেও কলকাতা থেকে পৌঁছে যেতে পারেন গঙ্গাসাগর। কী করে যাবেন? রইল তিনটি সহজ রাস্তার সন্ধান।
- রাস্তা ১ (ট্রেনে নামখানা হয়ে)
শিয়ালদা থেকে দক্ষিণ শাখার ট্রেনে নামখানা পৌঁছোনো যায় সহজেই। সকালে ৫.৫০, ৭.১৪— এরকম দু’টি ট্রেন আছে। এর মধ্যে থেকে যে কোনও একটি ট্রেন ধরাই ভালো। নামখানা পৌঁছোতে ঘণ্টা আড়াই লাগবে। স্টেশনের বাইরে থেকেই টোটো পাওয়া যায়। সেই টোটোয় যেতে হবে গঙ্গাসাগর যাওয়ার লঞ্চ ঘাটে। লঞ্চে করে নদী পেরিয়ে সাগরদ্বীপের বেনুবন বলে একটি জায়গায় গিয়ে পৌঁছোবেন। সময় লাগবে ১ ঘণ্টার কাছাকাছি। সেখান থেকে আবার টোটোয় করে কপিলমুনির আশ্রম।
মনে রাখবেন: নামখানার লঞ্চঘাট থেকে এক একটি লঞ্চ কমবেশি ১ ঘণ্টা অন্তর ছাড়ে। তাছাড়া লঞ্চে ১০০-র বেশি যাত্রী তোলাও নিষেধ। ফলে দীর্ঘ ক্ষণ লাইনে দাঁড়াতে হতে পারে। সেই মানসিক প্রস্তুতি রাখা দরকার। এছাড়া শিয়ালদা নামখানা রুটে ট্রেনের সংখ্যা কম। ফলে ট্রেনে প্রচণ্ড ভিড় হতে পারে।
খরচ: কম বেশি ১৫০ টাকা থাকলেই শিয়ালদা থেকে পৌঁছে যাবেন গঙ্গাসাগর।
- রাস্তা ২ (ট্রেনে কাকদ্বীপ হয়ে)
এটি তুলনামূলক ভাবে বেশি পরিচিত পথ। স্বাভাবিক ভাবেই তাই এই পথে ভিড়ও বেশি। শিয়ালদা থেকে নামখানা রুটেই পড়ে কাকদ্বীপ স্টেশন। এটি নামখানার দু’টি স্টেশন আগে আসে। এই স্টেশনে নেমে টোটো ধরে যেতে হবে ‘লট এইট’ ঘাটে। সেখান থেকে ভেসেল ধরে পৌঁছোতে হবে সাগরদ্বীপের দিকে কচুবেরিয়া। তার পরে সেখান থেকে অটো, টোটো বা ম্যাজিক গাড়ি ধরে আবার কপিলমুনির আশ্রম। ট্রেনে যেতে সময় লাগবে আড়াই ঘণ্টার সামান্য কম। আর ভেসেলে সময় লাগবে ৪০-৪৫ মিনিট। তার পরে অটো বা ম্যাজিক গাড়িতে ৪০-৪৫ মিনিট। টোটো নিলে, ঘণ্টা দেড়েক।
মনে রাখবেন: এই রুটে ভিড় প্রচণ্ড বেশি। তবে মকর সংক্রান্তির সময়ে পর পর ভেসেল চলে। তাই এই রুটে তুলনায় দ্রুত পৌঁছোনে যায়।
খরচ: মোটামুটি ১৫০ টাকার মধ্যেই পৌঁছে যাবেন গঙ্গাসাগর।
- রাস্তা ৩ (ডায়মন্ড হারবার হয়ে, ট্রেনের ভিড় এড়িয়ে)
যদি ট্রেনের ভিড় থেকে একটু সরে গিয়ে পৌঁছোতে চান গঙ্গাসাগর, তাহলে এই রুটটি দিয়ে আপনি যেতে পারেন। এক্ষেত্রে খরচ একটু বেশি হতে পারে। প্রথমে শিয়ালদা থেকে ডায়মন্ড হারবার যেতে হবে ট্রেনে। এই রুটে ট্রেনের সংখ্যা অনেক বেশি। ফলে সহজে পৌঁছোতে পারবেন। ডায়মন্ড হারবার থেকে ঘনঘন বাস চলে কাকদ্বীপ পর্যন্ত। ডায়মন্ড হারবার স্ট্যান্ড থেকে ফাঁকা বাস দেখে বসে পড়তে পারেন। ঘণ্টা খানেক লাগবে কাকদ্বীপ পৌঁছোতে। তার পরে সেই আগের মতোই ভেসেলে কচুবেরিয়া হয়ে অটো, টোটো বা ম্যাজিক গাড়িতে গঙ্গাসাগর।
মনে রাখবেন: এই রুটে খরচ একটু বেড়ে যাবে। কারণ বাস ভাড়া কমবেশি ৪৫ টাকা করে। তবে এই রুটে ট্রেনের ভিড় এড়িয়ে গঙ্গাসাগর পৌঁছোতে পারবেন। সময় একটু বেশি লাগতে পারে। নির্ভর করছে ডায়মন্ড হারবার থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তায় জ্যাম কী রকম, তার উপর।
খরচ: মোটামুটি ২০০ টাকার মধ্যেই পৌঁছে যাবেন গঙ্গাসাগর।