এই শুক্লপক্ষের একাদশীকে বলা হয় শ্রাবণ পুত্রদা একাদশী। এটা বিশ্বাস করা হয় যে শ্রাবণ পুত্রদা একাদশীর উপবাস যজ্ঞের মতোই পুণ্য ফল দেয়। এই উপবাস পালন করলে ভক্তরা সন্তান সুখের বর পান। এবার পুত্রদা একাদশী পালিত হবে ২৭অগস্ট, রবিবার।
শ্রী পদ্মপুরাণ অনুসারে, দ্বাপর যুগে মহিষমতিপুরীর রাজা মহিজিত ছিলেন অত্যন্ত শান্তিপ্রিয় ও ধার্মিক কিন্তু তাঁর কোনও পুত্র ছিল না। রাজার শুভাকাঙ্ক্ষীরা মহামুনি লোমেশকে এ কথা জানালেন। মুনি বলেছিলেন যে রাজন পূর্বজন্মে অত্যাচারী ও অর্থহীন বৈশ্য ছিলেন। একাদশীর দিন তিনি জঘন্য পাপ করেছিলেন, যার ফল তাঁকে এই জন্মেই ভোগ করতে হবে।
পূর্ব জন্মে একবার একাদশীর বিকেলে তৃষ্ণার্ত হয়ে মাহিষমতিপুরী এক জলাশয়ে পৌঁছে। সেখানে তিনি একটি তৃষ্ণার্ত গরুকে গরমে কষ্ট পেয়ে জল পান করতে দেখেন। এটা দেখে তিনি তাকে থামিয়ে দিয়ে নিজেই সেই জল পান করতে লাগলেন। তার এ কাজ ধর্মানুসারে হয়নি। সে দিন ছিল একাদশী। পূর্বজন্মের সৎকর্মের ফলে পরের জন্মে তিনি রাজা হন, কিন্তু সেই একটি পাপের কারণে তিনি নিঃসন্তান থেকে যান।
মহামুনি বললেন, রাজার সকল শুভাকাঙ্ক্ষীরা যদি শ্রাবণ শুক্লপক্ষের একাদশী তিথিতে উপবাস করে তার পুণ্য রাজাকে দান করে, তাহলে অবশ্যই সন্তান লাভ হবে। এভাবে ঋষির নির্দেশ অনুসারে প্রজাদের সঙ্গে রাজাও এই উপবাস পালন করেন। এই উপবাসের প্রভাবে কয়েক মাস পর রানী একটি উজ্জ্বল পুত্রের জন্ম দেন। সেই থেকে এই একাদশী শ্রাবণ পুত্রদা একাদশী নামে পরিচিত হয়।
শ্রাবণ পুত্রদা একাদশীর তাৎপর্য
হিন্দু ধর্মে শ্রাবণ পুত্রদা একাদশীকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। বিশেষ করে নিঃসন্তান দম্পতিদের জন্য এই উপবাস অত্যন্ত ফলদায়ক বলে মনে করা হয়। বিশ্বাস অনুসারে, সম্পূর্ণ আচার-অনুষ্ঠান ও ভক্তি সহকারে এই উপবাস পালন করলে অবশ্যই সন্তানের সুখ পাওয়া যায়। এই উপবাস পালন করলে সকল পাপ বিনষ্ট হয় এবং মৃত্যুর পর মোক্ষ লাভ হয়। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সর্বপ্রথম ধর্মরাজ যুধিষ্ঠিরকে এই উপবাসের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেছিলেন।