রাস্তার এক ধারে মঞ্চ বেঁধে একের পর এক আক্রমণ শানাচ্ছেন নেতারা। আর মঞ্চের ঠিক অপর প্রান্তে রাস্তার নিজের বাড়ির মূল ফটকে বসে তা শুনে চলছেন তিনি। এই ঘটনারই সাক্ষী থাকল আলিপুরদুয়ার শহরের মাধবমোড় এলাকা।
ঘটনাটি কী? মাধবমোড় এলাকাতেই আলিপুরদুয়ার পুরসভা। যার ঠিক উলটো দিকে বাড়ি ওই পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান আশিস দত্তের। যিনি অধুনা ঘাসফুল ছেড়ে পদ্মফুলে যোগ দিয়েছেন। আর তাঁর আমলে পুরবোর্ডের দুর্নীতি নিয়ে পুরসভার সামনে বিজেপি একটি সভা করছিল। সেই সভায় উপস্থিত থেকে আশিস দাবি করেছিলেন, তিনি কখনও দুর্নীতি করেননি। তৃণমূল কংগ্রেসের কয়েকজন কাউন্সিলর দুর্নীতি করেছিলেন। ওই দিন তৃণমূলের জেলা শীর্ষ নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধেও ‘ক্ষমতাবলে’ আত্মীয়দের চাকরি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন আশিস।
কিন্তু বিজেপির সভাস্থলের একই জায়গায় পালটা সভা করে তৃণমূল। সভার বিষয় বিজেপির মিথ্যাচার ও নতুন কৃষি আইন প্রত্যাহার হলেও তা কার্যত আশিসকে আক্রমণ করা হয়। তবে মুখে অবশ্য আশিসের নাম নেননি তৃণমূলের জেলা নেতারা। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, ‘আলিপুরদুয়ারের মানুষ জানেন, কারা সরকারি জমি দখল করে, নর্দমা বন্ধ করে দিয়ে সম্পত্তি তৈরি করে মাসের খরচ চালাচ্ছেন। দল অনেক দিয়েছে, দলের থেকে অনেক নিয়েছেনও। যখন বুঝলেন দল থেকে নেওয়ার আর কিছু নেই, তখন বিজেপিতে যোগ দিলেন।’ তৃণমূল বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘আপনি তৃণমূলের থেকে সব নিলেন। আর এখন সেই তৃণমূলই আপনার কাছে খারাপ হয়ে গেল।’ আশিস পালটা বলেন, ‘আমার বাবা আমাকে অনেক সম্পত্তি দিয়ে গিয়েছেন। আমি পূর্ত দফতরের ঠিকাদারির কাজও করতাম। তাই আমার আয়ের উৎস না খুঁজে তৃণমূল নেতারা নিজেরা সম্পত্তি কী করে বাড়াচ্ছেন, তা মানুষকে জানান।’
উল্লেখ্য, তৃণমূল নেতাদের আক্রমণের লক্ষ্যে ছিলেন বিজেপিতে যাওয়া প্রাক্তন সাংসদ দশরথ তিরকেও। তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘কিছু পচা আলু বিজেপিতে গিয়েছেন। বিজেপি কর্মী–সমর্থকেরা মেনে নিতে পারছেন না। তাই কুমারগ্রামের পচা আলু এখনও নিজের এলাকায় যেতে পারছেন না।’