টিকিট না পেয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। নিজের গোঁসা উগরে দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছেদের দিকেও এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু নয়াদিল্লির এক ফোনে ঘুরে গেলেন ১৮০ ডিগ্রি। তারপরই আজ, শনিবার শিলিগুড়ি কাওয়াখালিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় হাজির থাকলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বারলা। উপস্থিত থেকে একেবারে প্রধানমন্ত্রীর পাশে বসলেন বারলা। দু’জনের মধ্যে কিছু কথাও হল। যা কেউ খোলসা করেননি। তবে আপাতত যে বিদ্রোহে যবনিকা পতন পড়েছে সেটা শরীরী ভাষায় স্পষ্ট।
এদিকে আজ শনিবার শিলিগুড়িতে নরেন্দ্র মোদীর সভায় দেখা গেল জন বারলাকে। এই ঘটনা দেখা দিতেই বোঝা যায় কিছু একটা হয়েছে। এদিন মঞ্চে মোদীর পাশেই বসেছিলেন বারলা। লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে বিজেপি। আর সেই তালিকা প্রকাশ্যে আসতেই দেখা যায় আলিপুরদুয়ারে প্রার্থী বদলে দিয়েছে বিজেপি। তখনই ক্ষেপে ফায়ার হন জন বারলা। যিনি এখানের সাংসদ ছিলেন। তবে এবার আর তাঁকে এই কেন্দ্রে টিকিট দেয়নি গেরুয়া শিবির। বদলে মাদারিহাটের বিধায়ক মনোজ টিগ্গাকে এই কেন্দ্রে টিকিট দিয়ে চমকে দিয়েছে বিজেপি। আর টিকিট না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন জন বারলা। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে চা বলয়ের ভোট টানতে জন বারলার জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগায় বিজেপি। বারলাকে পাশে নিয়ে এনআরসি সামনে আনেন অমিত শাহ। তখন বারলা জয়লাভ করেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও হন। কিন্তু পাঁচ বছরে ছবিটা পালটে গেল।
আরও পড়ুন: ‘গোর্খাদের সমস্যা নিয়ে সংবেদনশীল বিজেপি’, পাহাড়ের ভোট টানতে বার্তা মোদীর
অন্যদিকে রাগের চোটে জন বারলা এমনও দাবি করেছিলেন, মনোজ জেলা সভাপতি হয়েছেন তাঁর সম্মতিতেই। মনোজকে ছোট ভাইয়ের মতো দেখতেন। কিন্তু প্রার্থী হয়ে একবারও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। উল্টে তাঁর চা–বাগান সংগঠন ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেছে। তাই মনোজ টিগ্গার হয়ে প্রচারে পর্যন্ত যাবেন না। বিজেপি সূত্রে খবর, চা শ্রমিক সংগঠনের নামের স্বেচ্ছাচারিতার নানা অভিযোগ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে জমা হতে শুরু করে। তার জেরেই এবার লোকসভা নির্বাচনে টিকিট পাননি বারলা। তার পরিবর্তে প্রার্থী হন বিজেপি নেতা মনোজ টিগ্গা।
এছাড়া বিদ্রোহ যখন বেশ অনেকদূর পৌঁছয় তখন ঠিক হয় জেপি নড্ডা কথা বলবেন জন বারলার সঙ্গে। তারই মধ্যে শনিবার শিলিগুড়িতে নরেন্দ্র মোদীর সভাস্থলে দেখা যায় আলিপুরদুয়ারের সাংসদকে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও দাবি করেন, জন বারলার সঙ্গে সমস্যা মিটেছে। কয়েকদিনের মধ্যেই জেপি নড্ডার সঙ্গে বারলা দেখা করতে যাবেন। আজ চা–বাগানের বাড়ি থেকে বের হয়ে প্রধানমন্ত্রীর সভার উদ্দেশ্যে রওনা হন। তখন বারলা সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সভায় যোগ দেব। নরেন্দ্র মোদী আমার বাবা–মা। বিজেপি ছাড়ার কথা ভাবছি না। সুযোগ পেলে উত্তরবঙ্গের কিছু বিজেপি নেতার দুর্নীতির প্রমাণ তুলে ধরব প্রধানমন্ত্রীর সামনে।’