বাংলার সরকারি স্কুলগুলিতে বিনামূল্যে বই থেকে শুরু করে পোশাক, জুতো এবং বড় পড়ুয়াদের সবুজ সাথীর সাইকেল দেওয়া হয়। সেখানে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল এসে দেখতে পেয়েছে, পড়ুয়াদের পায়ে জুতো নেই। এই নিয়ে তাঁরা একটি রিপোর্ট দিয়েছে। সেখানে এই কথা লেখা রয়েছে। তা নিয়ে সমালোচনা করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। আবার রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে বেশ কিছু কাজও হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা। তাতে ওই প্রতিনিধিদলের প্রশংসাও করেছেন ব্রাত্য। সব মিলিয়ে একটা সরগরম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এদিকে পায়ে শীতকালে কেন পড়ুয়াদের জুতো নেই? এই প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা। কেন্দ্রীয় দলকে ‘গেরুয়া রঙে রাঙানো’ বলে সমালোচনা করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। পর দিনই প্রশংসা পেয়ে লিখলেন, ‘আমরা যে ভাল কাজ করেছি, সেটা তাঁরা বুঝতে পারছেন’। শিক্ষামন্ত্রীর এমন দুই মন্তব্য প্রকাশ্যে এসেছে। দুই আদিবাসী প্রধান জেলার স্কুলগুলি পরিদর্শন করে এমন তথ্য তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা। তাঁরা দেখতে পেয়েছেন, কনকনে ঠান্ডায় খালি পায়ে স্কুলে ঘুরে বেড়াচ্ছে পড়ুয়ারা। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার নানা স্কুল পরিদর্শন করেন। তাঁদের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, তালড্যাংরার মুগাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের খালি পায়ে স্কুলে দেখা গিয়েছে।
অন্যদিকে এই স্কুলের বেশিরভাগ পড়ুয়ার পায়ে জুতো ছিল না। দু’চারজন স্কুলপড়ুয়া জানিয়েছে, পোশাক প্রত্যেক বছর মেলে। কিন্তু জুতো ঠিক মতো মেলে না। তাই খালি পায়ে থাকতে হয়। আবার অনেকের পায়ের সঙ্গে জুতোর মাপে গণ্ডগোল হয়েছে। সেটা ফেরত গিয়েছে। আসতে সময় নিচ্ছে। এই বিষয়ে স্কুলের প্রধানশিক্ষক সুকুমার ভৌমিক কিছু বলতে চাননি। আর অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক নন্দিতা সিনহার দাবি, ‘দু’বছর অন্তর জুতো বিলি হয়। জুতো আসেনি বলে বিলি করা হয়নি।’ তবে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে খবর, প্রায় ২ লক্ষ ৩৪ হাজার পড়ুয়ার জন্য জুতোর আবেদন জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুর প্রাথমিক স্কুলে পঠনপাঠন বন্ধ, ইসিএলের খনির জেরে বিপদে পড়ুয়ারা
এছাড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে খবর, সব ব্যবস্থা রয়েছে। পড়ুয়ারা সবই পাচ্ছে। কোথাও কোনও অসুবিধা হলে তা দেখা হচ্ছে। আর জুতোর ক্ষেত্রে সময় লাগছে। তবে পাবে সবাই। সব স্কুলেই মিড–ডে মিল রান্না করার আলাদা ঘর রয়েছে। এই রিপোর্টের বিষয়ে ব্রাত্য বসু বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় দল জানেন না, রাজ্য সব সরকার পোষিত স্কুলে পোশাক ও জুতো দেয়।’ আর কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার বলেন, ‘মকর সংক্রান্তির মধ্যে পড়ুয়ারা জুতো না পেলে আমি নিজেই দেব।’ পাল্টা মিড–ডে মিল নিয়ে ব্রাত্যর কথায়, ‘কেন্দ্রীয় সরকার মিড–ডে মিলের পরিকাঠামো গড়তে অর্থ বরাদ্দ করেনি। রাজ্যই সমস্ত স্কুলে রান্নাঘর তৈরি করবে।’ সুভাষের পাল্টা দাবি, ‘শিক্ষা মন্ত্রকের রুশা ১ এবং রুশা ২ প্রকল্পে রাজ্য বরাদ্দ টাকার কাজ করতে পারছে না।’ আর এক্স হ্যান্ডলে ব্রাত্য বসুর প্রশংসা পোস্ট, ‘কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক দল এসেছে। নানা জায়গায় ঘুরে দেখেছে, ভাল কাজ করছি। সেটা তাঁরা রিপোর্টে লিখছেন’।