প্রতিদিনই বাড়ছে জ্বালানি তেলের মূল্য। এর প্রভাব পড়ছে বাজারে। ফলস্বরূপ খাদ্য দ্রব্যের দামও বেড়েছে। এবার দুর্মূল্যের বাজারে কোপ পড়ল স্কুলের পড়ুয়াদের মিড ডে মিলের মেনুতেও। ফলে এখন অনেক স্কুলেই ডিম বা ডাল ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছে না। স্কুলের শিক্ষকদের মতে, এর জন্য বরাদ্দ না বাড়ালে কোনওভাবে পড়ুয়াদের মিড ডে মিলের মেনু ঠিক রাখা সম্ভব নয়।
অনেক স্কুলেই পড়ুয়াদের গোটা ডিম না দিয়ে এখন ভুজিয়া করে খিচুড়ির সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে কম ডিমেই অনেক বেশি সংখ্যক পড়ুয়াকে খাওয়ানো সম্ভব হচ্ছে। এমনটাই জানালেন হাওড়া ডোমজুড় কেশবপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর দাস। তিনি বলেন, ‘খাদ্য দ্রব্যের দাম যেভাবে বেড়েছে তাতে মাথাপিছু একটি করে ডিম দেওয়া সম্ভব নয়। তাই ভুজিয়া করে ডিম দেওয়া হচ্ছে। এরফলে ১২০ টি ডিম এখন ২০০ জনকে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।’ প্রসঙ্গত, মিড-ডে-মিল বাবদ কেন্দ্র ৬০ শতাংশ এবং রাজ্যে দিয়ে থাকে ৪০ শতাংশ। মিড-ডে-মিল বাবদ পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মাথাপিছু চার টাকা ৯৭ পয়সা এবং ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মাথাপিছু বরাদ্দ সাত টাকা ৪৫ পয়সা। এখন একটি ডিমের দামই পাঁচ থেকে সাড়ে ৫ টাকা । এই অবস্থায় কোনওভাবেই সপ্তাহে দুদিন ডিম দেওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করছে একাধিক স্কুল।
প্রসঙ্গত, যেভাবে গ্যাস, মশলাপাতির দাম বেড়েছে তাতে খাবারের গুণগত মানের সঙ্গে আপোস করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস। পশ্চিমবঙ্গ প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণাংশু মিশ্রও জানিয়েছেন, বাধ্য হয়ে পড়ুয়াদের মিড ডে মিলের মেনু থেকে পুষ্টিকর খাবার বাদ দিতে হচ্ছে। তিনি মনে করেন পড়ুয়াদের গুণগত ভালো খাবার দিতে গেলে সে ক্ষেত্রে মাথাপিছু কমপক্ষে ১০ টাকা খরচ করতে হবে। যদিও এ বিষয়ে শিক্ষা দফতরের মিড ডে মিলের অধিকর্তা জানিয়েছেন, ‘রাজ্যের পক্ষে যতটা করা সম্ভব তা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’