অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সামনে খেলছিল শিশুরা। কারণ তখন পাঠ নেওয়ার সময় হয়নি। এই খেলার সময়ই আচমকা বিকট শব্দে কেঁপে উঠল এলাকা। তার জেরে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দা এবং অঙ্গনওয়াড়ি স্কুলের কর্মীরা। সেখানে এসে দেখতে পান, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে তিনজন শিশু। তাঁরা এই দৃশ্য দেখেই সবটা বুঝতে পারেন। আর দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। বল ভেবে খেলতে গিয়েই বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। আজ বুধবার মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার এই ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে। ইমামনগর পঞ্চায়েত এলাকা কেঁপে ওঠে। আহত শিশুরা জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা জানান, এক শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে ফরাক্কা থানার পুলিশ।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, ফরাক্কার ইমামনগর পঞ্চায়েত এলাকার হাউজনগরে আজ স্কুলে যাচ্ছিল পড়ুয়ারা। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সঙ্গেই চলে স্কুল। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে তখন খিচুড়ি রান্না চলছিল। তাই পাঠ শুরু না হওয়ায় কাছেই মাঠে খেলাধুলো করছিল তিনজন শিশু। তখন এক শিশু দেখতে পায় কাছেই পড়ে রয়েছে বলের মতো গোল আকারের কয়েকটি জিনিস। খেলার বল ভেবে একজন শিশু সেই বোমা হাতে তুলে নেয়। তারপরই বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। তিন শিশুই এই বিস্ফোরণে আহত হয়। নিরীহ শিশু মন বোমাকে বল ভেবে কুড়িয়ে নেয়। বল ভেবে তা হাতে তুলতেই বিকট শব্দে ফাটে বোমা। আর ছিটকে পড়ে তিন শিশু।
অন্যদিকে এই ঘটনার পর তিনজন শিশুরই শরীরের বেশ কিছুটা অংশ ঝলসে গিয়েছে। যে শিশুটি হাতে বোমাটি তুলেছিল, তার শরীরে মারাত্মক আঘাত লেগেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বোমাগুলি উদ্ধার করেছে। কে বা কারা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কাছে বোমা রেখে গিয়েছিল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এদিন আবার মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ায় তাজা বোমা উদ্ধার হয়েছে বলে খবর। একই জেলার বিভিন্ন জায়গায় বোমা উদ্ধারের ঘটনায় আতঙ্ক ভুগছেন গ্রামবাসীরা। আগেও এমন হয়েছে। তবে এভাবে সিরিয়াল বোমা উদ্ধার হয়নি। গ্রামবাসীদের সহায়তায় তিনটি শিশুকেই জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ধর্মতলায় বিজেপির সভায় আপত্তি অব্যাহত, প্রধান বিচারপতির দুয়ারে গেল রাজ্য
আর কী জানা যাচ্ছে? পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা লাগাতার ঘটেছিল মুর্শিদাবাদে। এবার সেই বোমার আঘাতে আক্রান্ত হল শৈশব। কে বোমা রাখল? কেনই বা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সামনে বোমা রাখল? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ। এখনও সেখানে বোমা ফাটার চিহ্ন দগদগে হয়ে রয়েছে। তবে গোটা বিষয়টি পরিকল্পনা করেই করা হয়েছিল বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। পর পর বোমা উদ্ধার হওয়ায় নাশকতার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।