কেন্দ্রের একাধিক প্রকল্প রয়েছে। সেই সমস্ত প্রকল্পের নির্দিষ্ট নাম রয়েছে। তবে রাজ্য সরকার আদৌও সেই নামেই প্রকল্প গুলি বাস্তবায়িত করছে কিনা? বা অন্যান্য পদ্ধতি ঠিকমতো মানা হচ্ছে কিনা? তা যাচাই করার করার নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিটি মন্ত্রককে পৃথকভাবে এই প্রকল্পগুলি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। আর এনিয়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। এর আগে আদৌও এইভাবে প্রতিটি মন্ত্রক কোনও প্রকল্পের খোঁজখবর নিয়েছে কিনা তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
আরও পড়ুন: ‘প্রকল্পের টাকা দেয় না অথচ কেন্দ্রীয় টিম পাঠায়’, বিজেপিকে তোপ মমতার
জানা গিয়েছে, কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্প কীভাবে পরিচালনা করতে হবে? সে বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সহ সমস্ত রাজ্যকে লিখিতভাবে বর্ণনা পাঠিয়েছে কেন্দ্র সরকার। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, কোনওভাবে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদল করা যাবে না। তবে বিভিন্ন রাজ্যভিত্তিক ভাষায় সেই নামের নিখুঁত অনুবাদ করা যাবে। প্রকল্পের বাস্তবায়ন করতে গেলে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি মেনে চলতে হবে। সে সমস্ত কাজই খতিয়ে দেখবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রকগুলি। সেগুলি ক্ষতি দেখার পর অর্থ মন্ত্রকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যদিও তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ আবাস যোজনার ক্ষেত্রে নাম বদলের অভিযোগ উঠেছিল। সে ক্ষেত্রে পরবর্তীকালে নাম সংশোধন করা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও পশ্চিমবঙ্গ এখনও কেন্দ্রীয় বরাদ্দ পায়নি। একইভাবে জল জীবন মিশনের ক্ষেত্রেও নাম সংশোধন হয়েছে। তারপরেও বরাদ্দ মেলেনি।
বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে টাকা না দেওয়ার অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গের দীর্ঘদিনের। এছাড়াও, রাজ্যে একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদল করা হয়েছে বলে অতীতে বিরোধীরা বারবার অভিযোগ তুলেছে। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের তরফে খতিয়ে দেখার বিষয়কে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকরা। যদিও অনেকে মনে করছেন, এর ফলে এটাই বোঝায় যে প্রকল্পে কেন্দ্রীয় নজরদারি আরও বাড়ানো হবে। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্র সন্তুষ্ট হলে তবে বরাদ্দ পাবে রাজ্য। ইতিমধ্যে কেন্দ্রের এই উদ্যোগের পরে আক্রমণ করেছেন রাজ্যের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি অভিযোগ করেছেন, ‘রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে এই পদক্ষেপ করেছে।’ তাঁর বক্তব্য, ‘প্রকল্পের নামে কি এসে যায়! কাজ হচ্ছে কিনা সেটাই হচ্ছে আসল বিষয়।’ তিনি বলেন, ‘প্রকল্পে শুধুমাত্র কেন্দ্র বরাদ্দ করে না, রাজ্যও অর্থ বরাদ্দ করে। এভাবে রাজনৈতিক স্বার্থে অর্থনৈতিক অবরোধকে কোনওভাবেই যুক্তরাষ্ট্রে কাঠামোতে সমর্থনযোগ্য নয়।’ পালটা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অর্থ বরাদ্দ না করার অভিযোগ তুলেছেন চন্দ্রিমা। তাঁর অভিযোগ, গত বছর অগাস্টে আবাস প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখে গিয়েছিলেন কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা। কিন্তু তারপরেও বরাদ্দ আসেনি। এই অবস্থায় কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ বরাদ্দের জন্য কতটা কার্যকর হবে? তাই নিয়ে কৌতুহল প্রশাসনিক মহলে।