বন্যপ্রাণীর দেহের অংশ থেকে শুরু করে চামড়া পাচারে যুক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর দুই জওয়ান বলে অভিযোগ। এমনকী হাতির দাঁত পাচার করার ঘটনায় খোদ জওয়ানরা জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এসএসবি’র ৪১ নম্বর ব্যাটালিয়ান, টুকরিয়াঝাড় বন দফতর এবং ‘ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরো’র শিলিগুড়ি শাখা হাতির দাঁত–সহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। স্বাভাবিক কারণেই কাদের উপর নিরাপত্তার দায়িত্ব? বলে প্রশ্ন উঠছে।
এদিকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ওই দুই জওয়ানের মধ্যে একজন বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সে (বিএসএফ) কর্মরত। আর একজন কর্মরত ইন্ডিয়ান রিজার্ভ ব্যাটালিয়নে। ওই পাঁচজন পাচারকারীকে নকশালবাড়ি থানার হাতে তুলে দিয়েছে এসএসবি। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের অন্তর্গত নকশালবাড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে এদের পাকড়াও করা হয়। সূত্রের খবর, ওই পাঁচজনকে প্রথমে আটক করা হয়। তারপর জেরায় অসঙ্গতি মেলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়।
ধৃতদের নামগুলি ঠিক কী? বন দফতর সূত্রে খবর, ধৃতদের নাম তপন থাপা, প্রভু মুন্ডা, শ্রিয়ান খেরিয়া, ধরম দাস লোহার, রিয়াস প্রধান। এদের মধ্যে প্রথম চারজন আলিপুরদুয়ারের কালচিনির বাসিন্দা। রিয়াস পূর্ব সিকিমের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরেই এরা পাচারের কাজে জড়িত। কিন্তু দু’জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান জড়িত থাকায় গোটা দলকে ধরা যাচ্ছিল না। উদ্ধার হওয়া হাতির দাঁত ভুটান থেকে নকশালবাড়ি হয়ে নেপালে পাচারের ছক কষা হয়েছিল। ধৃতদের হেফাজত থেকে ৯৪৫ গ্রাম ওজনের হাতির দাঁত উদ্ধার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে রিয়াজ প্রধান। এই ব্যক্তি সিকিম পুলিশের কনস্টেবল পদে কর্মরত। সুতরাং একটা বড় র্যাকেট চলছিল।
আরও পড়ুন: তারাপীঠে কি লকডাউন চলছে? পর্যটকশূন্য তীর্থস্থানে ‘জয় মা তারা’ ধ্বনি উঠছে না
আর কী জানা যাচ্ছে? কার্শিয়াং বনবিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার ভূপেন বিশ্বকর্মার নেতৃত্বে একটি দল পাঁচজনকে দীর্ঘক্ষণ ধরে জেরা করেন। পরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংশ্লিষ্ট দফতরেও খবর দেওয়া হয়। এই বিষয়ে ওয়াইল্ড ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরোর অফিসার রজনীশ কুমার বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত চলছে। এই ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ বন দফতরের অনুমান, ওই হাতিটিকে মেরে দাঁত বের করে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। যদিও এই দাঁত সেই মৃত হাতিরই কি না সেটা এখনও নিশ্চিত হতে পারছেন না বন দফতরের কর্তারা।