সাদা কাগজের ওপর লাল রঙে লেখা ‘মাওবাদ এক হও’। এবার এমনই পোস্টার মিলল বীরভূমে। এ নিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে এ ব্যাপারে জানিয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
সোমবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটে বীরভূমের লোকপুর থানার খড়িকাবাদ গ্রামের নির্মীয়মাণ একটি বাড়িতে। এলাকার মানুষ ওই বাড়িতে বেশ কয়েকটি ওমন মাওবাদীদের নাম–লেখা পোস্টার দেখতে পান। তাতে লেখা, ‘মাওবাদ এক হও, আমাদের অধিকার ছিনিয়ে লিব, পুলিশগিরি চলবে না, সিআরপিএফ চলবে না, দাদাগিরি চলবে না।’ আর শেষে লেখা ‘লাল সেলাম’। অপটু হাতে কে বা কারা এই পোস্টার লিখে এলাকায় ছড়িয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, আজ ২৪ নভেম্বর সিপিআইয়ের (মাওবাদী) শীর্ষ নেতা কিষাণজির মৃত্যুবার্ষিকী। প্রতি বছর এই উপলক্ষে দেশের প্রত্যেকটি মাওবাদী প্রভাবিত রাজ্যগুলিতে শহিদ সপ্তাহ পালন করে সিপিআই (মাওবাদী)। তাঁদের কিছু নির্দিষ্ট কর্মসূচিও থাকে। সেই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে এই বীরভূমের ওই গ্রামীণ এলাকায় এই পোস্টার দেওয়া হয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
গত দু’মাস আগে, ২৬ সেপ্টেম্বর বীরভূমের পাঁড়ুইয়ে লাল কালিতে তৃণমূল নেতাদের নাম লেখা মাও মাওবাদী পোস্টার। উদ্ধার করেছিল পুলিশ। পাঁড়ুইয়ের বাতিকার গ্রামে এলে ওই পোস্টারগুলি ছিঁড়ে দিয়েছিল পাঁড়ুই থানার পুলিশ। ওই পোস্টারে ‘জনগণের টাকা ফেরত দাও’— এই দাবি তোলা হয়। এর আগেও পাড়ুই থানা এলাকায় স্থানীয় ১৩ জন তৃণমূল নেতার নাম লেখা মাওবাদী পোস্টার উদ্ধার হয়। সে বার তৃণমূলের দুটি দলীয় কার্যালয় ও একটি বাসস্ট্যান্ড থেকে পাওয়া যায় পোস্টারগুলি।
গত কয়েকমাসে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায় এমন মাওবাদী পোস্টার উদ্ধার হওয়ার ঘটনা রয়েছে। সিপিআই (মাওবাদী)–র প্রতিষ্ঠা দিবসের দিন বাঁকুড়ার সেরেঙ্গায় পাওয়া যায় হাতে লেখা চারটি মাওবাদী পোস্টার। অগস্টে স্বাধীনতা দিবসের ঠিক আগের দিন ঝাড়গ্রামের ভুলাভেদা এলাকা থেকে প্রায় এক ডজন মাওবাদী পোস্টার উদ্ধার করে পুলিশ। ওই পোস্টারে স্থানীয় বাসিন্দাদের এই স্বাধীনতা দিবসকে কালা দিবস হিসেবে পালন করতে বার্তা দেওয়া হয়। এর পর ৪ সেপ্টেম্বর ফের ঝাড়গ্রামেরই বেলপাহাড়ি থেকে কিছু হাতে–লেখা মাওবাদী পোস্টার পাওয়া যায়।