ভোটে জিতে এমএলএ হয়েছেন। কথা মতো কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাও পেয়েছেন তাঁরা। কিন্তু নিজেরই তো মাথা গোঁজার জায়গা ঠিকঠাক নেই। এখন এই চারচারজন নিরাপত্তা রক্ষীকে রাখবেন কোথায়। তাঁদের খাবার বন্দোবস্তই বা কোথা থেকে হবে। কার্যত অথৈ জলে পড়েছেন বিজেপির একাধিক বিধায়ক। ওই যেমন চন্দনা বাউড়ি। তিনি এখন বাঁকুড়ার শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক। এই তো ভোটের আগেও রাজমিস্ত্রি স্বামীর সঙ্গে দিনমজুরির কাজও করতেন। সংসারের নিত্য অভাব। তার মাঝেই ভোটে জিতেছেন। রাজ্য পুলিশের একজন নিরাপত্তারক্ষী ভোটের আগে থেকেই তাঁর সঙ্গে ছিল। এবার সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও চারজন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষী। আপাতত তাঁদের রান্নার ভারও নিজের কাঁধে তুলে নেন চন্দনা। সঙ্গে শ্বাশুড়িও সহায়তা করেন। ভাত মুড়ি যা জুটছে সেটাই ভাগ করে খাচ্ছেন তাঁরা সকলেই। আর প্রতিবেশীর নির্মীয়মান বাড়িতেই তাঁদের রেখেছেন বিধায়ক। বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি বলেন, ‘জওয়ানদের রাখার মতো ঘর আমাদের নেই। পাশেই একজনের বাড়িতে তাদের রেখেছি। সেখানে আবার জানালা, দরজা ছিল না। ভোটের আগে বাড়িতে লাগাব বলে দুটো জানালা আর একটা দরজা কেনা ছিল। সেগুলোই স্বামী ওই বাড়িতে লাগিয়ে দিয়েছে।’ তবে সূত্রের খবর, তিনি আপাতত নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহার করার পরিকল্পনা নিয়েছেন। এব্যাপারে ফেসবুকেও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। গাড়ি নয় বাইকে চেপেই পরিষেবা দিচ্ছেন তিনি।
তবে শুধু চন্দনা নন,সোনামুখীর বিধায়ক দিবাকর ঘরামিও পড়েছেন অস্বস্তিতে। কোনওরকমে চাষ আবাদ করে সংসার চলে তাঁর। ভোটে জেতার পর তিনিও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পেয়েছেন। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষী ৪জন ও রাজ্য পুলিশের ১জন মিলিয়ে মোট ৫জনকে কোনওরকমে নিজের দোকানঘরে রেখেছেন। তিনি বলেন, ‘খুব কষ্ট করেই জওয়ানরা থাকছেন। আমরা যা খাচ্ছি সেটাই খাওয়াচ্ছি।’
মালদহের গাজোলের বিধায়ক চিন্ময় দেব বর্মন। তিনি বেসরকারি বিমা সংস্থায় কাজ করতেন। আপাতত ছুটিতে। তাঁর বাড়িতেও একজন রাজ্য পুলিশ ও চারজন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা রক্ষী। আপাতত বাড়ি ভাড়া করে রেখেছেন তাঁদের। তাঁদের খাওয়ানোর দায়িত্ব অবশ্য বিধায়ক নিজেই করছেন।
কোচবিহারের বিধায়ক মালতী রাভা রায়ও আপাতত ভাড়া বাড়িতে রেখেছেন নিরাপত্তারক্ষীদের। যতদিন না জওয়ানদের জন্য আলাদা গ্যাসের ব্য়বস্থা হচ্ছে ততদিন খাওয়াদাওয়া সব একসঙ্গেই হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘বাড়ির একতলায় ভাড়াটিয়া আছে। নীচের ভাড়াটিয়া উঠে গেলে ওখানেই জওয়ানরা থাকবেন। ’