কৃষ্ণনগরে সভা করতে এসে সেই ধর্মীয় তাস খেললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এখানে এসে শুরুতেই প্রধানমন্ত্রীর মুখে হরে কৃষ্ণ নাম শোনা গেল। দু’দিনের সফরে রাজ্যে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজনৈতিক কর্মসূচির পাশাপাশি একাধিক সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি। আজ, শনিবার কৃষ্ণনগরে রাজনৈতিক জনসভায় যোগ দেন মোদী। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে মতুয়া অধ্যুষিত কৃষ্ণনগর থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে লাগাতার আক্রমণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তৃণমূলের শাসনকালে কাঁদছে মা–মাটি–মানুষ। সন্দেশখালিতে মহিলারা দুর্গা রূপে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। বিজেপির চাপে অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছে। আমি দুঃখিত ময়দানটি ছোট। দয়া করে কেউ সামনে এগনোর চেষ্টা করবেন না। সামনে এগনোর জায়গা নেই।’
এদিকে শনিবার কৃষ্ণনগরে এসে বিজেপির জনসভায় আবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখে উঠে এল সন্দেশখালি প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে পুলিশ অপরাধী ধরে না। অপরাধীরা ঠিক করে তারা কবে ধরা দেবে। টিএমসি মানে বদলে গিয়েছে। টিএমসি মানে তু, ম্যায় অউর করাপশনই করাপশন। এখানকার রাজ্য সরকার কী কাজ করছে? মোদী বাংলায় প্রথম এইমস দেওয়ার কথা বলেছিলেন। তা করেছেন। মোদীর গ্যারান্টি মানে প্রতিশ্রুতি পূরণ হওয়ার গ্যারান্টি। যেভাবে তৃণমূলের সরকার চলছে, তাতে বাংলার মানুষ হতাশ। বাংলার মানুষ অনেক আশা নিয়ে তৃণমূলকে বারবার বিপুল জনাদেশ দিয়েছে। কিন্তু ওরা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।’
আরও পড়ুন: ‘সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে আবার গ্রেফতার করা উচিত’, এক্স হ্যান্ডেলে বিস্ফোরক কুণাল
অন্যদিকে নরেন্দ্র মোদী রাজ্য সরকারকে ছত্রে ছত্রে বিদ্ধ করেন। মোদীকে স্বাগত জানান রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী–সহ অন্যান্যরা। তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হল কাঁসার স্মারক, চৈতন্যের ছবি। প্রধানমন্ত্রী কথায়, ‘কেন্দ্রের সব উন্নয়নমূলক প্রকল্পে বাধা দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ। স্বাস্থ্য, নারী বিকাশ, উজ্জ্বলা প্রকল্প আটকে রেখেছে। তৃণমূল ঘরে ঘরে জল প্রকল্পেও তোলাবাজি চালাচ্ছে। রাজ্যে ২৫ লক্ষ মনরেগা কার্ড তৈরি হয়েছে। যার কোনও অস্তিত্ব নেই। বাংলার টিএমসি সরকার কেলেঙ্কারিতে মাস্টার। আপনারা এত মানুষ এসেছেন, আপনাদের ভালবাসায় এই মাঠ সভার জন্য ছোট হয়ে গিয়েছে। আজ ১৫ হাজার কোটির প্রকল্পের উদ্বোধন করলাম মানুষের উন্নতিতে। বাংলার ভাইবোনের জীবনকে সহজ করবে এই প্রকল্প। রোজগারের নতুন পথও খুলে যাবে।’
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হরে কৃষ্ণ, জয় গৌরাঙ্গ নাম নিয়ে এদিন বক্তব্য শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘এই মাটি শ্রীকৃষ্ণভক্তির পরম প্রচারক শ্রীচৈতন্যের জন্মভূমি। আমি কিছুদিন আগে দ্বারকায় সমুদ্রের নীচে তলিয়ে যাওয়া মন্দিরে পুজো করার সৌভাগ্য অর্জন করেছি।’ তারপরই তাঁর বক্তব্য, ‘এরা গরিবদের রেশন লুট করতেও পিছপা হয় না। বিজেপি সরকার মানুষের জন্য কাজ করে, এটা মোদীর গ্যারান্টি। তাই কৃষ্ণনগরেই শুধু নয় বাংলার ৪২টি আসনে পদ্মফুল ফোটানো দরকার। গ্রামে গ্রামে গিয়ে আগামী ১০০ দিন ধরে ঘরে ঘরে বলতে হবে, মোদীজি এসেছিলেন আপনাদের প্রণাম জানিয়েছেন।’