সেই ছোটবেলা থেকেই চরম দারিদ্রকে সঙ্গে নিয়েই বড় হয়েছিলেন কোচবিহার অসম সীমান্ত ঘেঁষা বক্সিরহাটের বাসিন্দা মণীন্দ্র দত্ত। কিন্তু মনের অদম্য জেদে একের পর এক হার্ডল পেরিয়েছেন তিনি। বার বার নানা বাধা সত্ত্বেও কোনওভাবেই পড়াশোনা বন্ধ করতে চাননি। প্রতিটি পরীক্ষাতেই রেজাল্ট নজরকাড়া। মাধ্যমিকে স্টার, উচ্চমাধ্যমিকেও প্রথম বিভাগ, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরেও নজরকাড়া ফলাফল। শিক্ষক হয়ে পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর স্বপ্ন দেখতেন তিনি। সেই শিক্ষকতাকেই পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন মণীন্দ্র। কিন্তু করোনা অতিমারিতে সেই আয়ের রাস্তাও আপাতত প্রায় বন্ধ।
পার্শ্ব শিক্ষক হিসাবে স্থানীয় একটি স্কুলে পড়াতেন তিনি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে সেই স্কুলও বন্ধ। এদিকে বাড়িতে অসুস্থ বাবা। গৃহশিক্ষকতা থেকে যে কটা টাকা আয় হত কড়া বিধির জেরে সেটাও প্রায় বন্ধ। অগত্যা অসুস্থ বাবার সঙ্গে ফুটপাতে ব্যবসা করছেন পার্শ্ব শিক্ষক। বাবাকে আর ভ্যান চালাতে না দিয়ে নিজেই হাতে তুলে নিয়েছে ভ্যানের হ্যান্ডেল। সংসারটাকে টানতে হবে তো?
তিনি বলেন, ‘বাবার আমার পড়াশোনায় একটা সময় সহায়তা করেছিলেন। এখন বাবা অসুস্থ। বাবার পাশে দাঁড়ানোটা আমার কর্তব্য। আমাদের বেতন বৃদ্ধি হলে খুব উপকার হত।’ মণীন্দ্রর মা বলেন, ‘আমার ছেলে বরাবরে মেধাবী ছাত্র। কিন্তু এখন করোনা পরিস্থিতিতে সব কিছুই বন্ধ। সংসার চলছে না। বাধ্য হয়েই বাবাকে সহায়তা করতে ফুটপাতে ব্যবসা করছে, ভ্যান টানতে হচ্ছে ছেলেকে। সরকার একটু মুখ তুলে চাইলে এই দুর্গতি হত না।’