কন্যাশ্রীর লক্ষাধিক টাকার জালিয়াতির অভিযোগ উঠল স্কুলের অস্থায়ী কর্মীর বিরুদ্ধে। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত স্কুলের অস্থায়ী কর্মী ও তাঁর বাবাকে। স্কুলের ছাত্রীদের কন্যাশ্রীর টাকা নিজের আত্মীয়ের অ্যাকাউন্টে পাচার করার অভিযোগ উঠেছে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
চাঞ্চল্যকর এই অভিযোগ উঠেছে জয়নগরের শ্যামসুন্দর বালিকা বিদ্যালয়। ঘটনা ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়েছে গোটা এলাকায়।পুলিশে এফআইআর দায়ের করা হলে, অভিযুক্ত ওই অস্থায়ী কর্মী ও তাঁর বাবাকে গ্রেফতার করেছে জয়নগর থানার পুলিশ। শনিবার ধৃতদের বারুইপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের নাম সন্দীপ রায়। অভিযুক্ত জয়নগর শ্যামসুন্দর বালিকা বিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মী। কন্যাশ্রীর ৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের অভিযোগ, ওই কর্মী কন্যাশ্রীর ৮ লক্ষ টাকা নিজের ও আত্মীয়ের অ্যাকাউন্টে ঢুকিয়ে আর্থিক জালিয়াতি করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্দীপ ওই বালিকা বিদ্যালয়ে ডাটা এন্ট্রির কাজ করতেন। সে কারণে স্কুলের আর্থিক বিষয়ে তার নখদর্পণে ছিল। কোথা থেকে স্কুলে টাকা আসছে বা কোথায় সেই টাকা খরচ হচ্ছে, তা সবটাই জানা ছিল অভিযুক্তের। স্কুলেরই এক ছাত্রী কন্যাশ্রীর টাকা না পাওয়ায়, তার পরিবারের লোকেরা স্কুলে খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারেন, সেই টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। তারা আরও জানতে পারেন, যে অ্যাকাউন্ট নম্বর ছাত্রীর নামে কন্যাশ্রী প্রকল্পে দেওয়া হয়েছিল, আদৌও সেটা ওই ছাত্রীর নয়। তখনই ওই ছাত্রীর পরিবার স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে অভিযোগ জানান।
একই রকম ভাবে বেশ কয়েকজন ছাত্রীর পরিবার অভিযোগ জানায় স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে। এর পরেই স্কুল কর্তৃপক্ষ কন্যাশ্রী প্রকল্পের পোর্টালে খোঁজ নিতে গিয়ে কারচুপি ধরা পড়ে। তাঁরা জানতে পারেন, ছাত্রীদের নাম-ঠিকানা একই রয়েছে, কিন্তু অন্য কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দেওয়া হয়েছে। আবার কয়েকটি ক্ষেত্রে দেখা যায়, একই ছাত্রীর নাম দু’বার করে নথিভুক্ত করা রয়েছে।
স্কুলের এই অভ্যান্তরীন কাজগুলো কার হাতে রয়েছে, সেটি খতিয়ে দেখতে গিয়ে সন্দীপের নাম উঠে আসে। দেখা যায়, সে ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সন্দীপ কন্যাশ্রী প্রকল্পের দায়িত্ব সামলেছিল। অভিভাবকদের অভিযোগ, তারা তাদের মেয়েদের সমস্ত তথ্য সন্দীপের কাছে জমা দিয়েছিলেন। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা স্বাগতা মণ্ডল বলেন, ‘সন্দীপকে এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে, সে নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়েছে। ’এরপরই সন্দীপের বিরুদ্ধে জয়নগর থানায় এফআইআর দায়ের করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের অভিযোগের ভিত্তিতে সন্দীপ রায় ও তার বাবা অনুপ রায়কে গ্রেফতার করেছে জয়নগর থানার পুলিশ।