বোধ নেই ঠিকই। তবে রক্তের টান হয়ত একেই বলে। অজান্তেই নিজের রক্ত দিয়ে দুই মুর্মূষু সারমেয়র প্রাণ বাঁচাল সারমেয়ই!
রামপুরহাট ভাঁড়াশাল পাড়া থেকে আসা একটি পথ কুকুরের বাঁ পায়ে ক্যান্সার ধরা পড়েছিল। গত এক মাসের মধ্যে তাকে দু'টি কেমো দেওয়ায়, তার শরীরের সমস্ত রক্ত শুকিয়ে গিয়েছিল। এমনকী, প্রাণ বাঁচাতে তার ক্যান্সারে আক্রান্ত পা কেটে বাদ দিতে হয়। তখনই শরীরের সমস্ত রক্ত বেরিয়ে যায়।
আরেকটি কুকুর সাঁইথিয়া জিয়ুইগ্রাম থেকে এসে পৌঁছয় সংস্থার সিউড়ির দফতরে। তার আবার তলপেটে মস্ত বড় একটি টিউমার বাসা বেঁধেছে। অস্ত্রোপচার ছাড়া বাঁচানোর কোনও উপায় নেই। দু'জনেরই জীবন সংকটাপন্ন। আবার দু'জনেই রক্তসল্পতায় ভুগছে। এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও মরণাপন্ন এই দুই সারমেয়কে রক্ত দিয়ে প্রাণ বাঁচাল সারমেয়ই। অবশ্য তাদের বাঁচাতে উদ্যোগ নিয়েছিল এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
কীভাবে এই দুই পথ কুকুরকে বাঁচানো যায়, তাই নিয়ে শুরু হয়েছিল চিন্তাভাবনা। এরপর রক্ত দেওয়ার জন্য সিউড়ির রাস্তা থেকে ছ'টি পথ কুকুরকে তুলে আনা হয়। রক্ত পরীক্ষায় তাদের মধ্যে দু'জনের রক্তের গ্রুপ মরণাপন্ন ২ পথ পুকুরের রক্তের সঙ্গে মিলে যায়।
শুক্রবার সিউড়ির পশু হাসপাতালে এই রক্তদানের আয়োজন করেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা। রাত একটা পর্যন্ত রক্ত স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চালানো হয়। দুই অসুস্থ সারমেয়কে বাঁচানোর জন্য রাত জাগেন চিকিৎসকরা। অবশেষে রক্ত স্থানান্তর প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হয়।
এ প্রসঙ্গে পশু চিকিৎসক সৌরভ কুমার বলেন, 'দু'টি কুকুরই রক্তস্বল্পতায় ভুগছিল। পরীক্ষামূলকভাবে এই পরিষেবা শুরু করা হয়।' স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক রাজশ্রী ঘোষ বলেন, ' আমরা রক্তসংগ্রহের জন্য বাড়তি ব্যাগ মজুত করে নিয়েছি। এখন চারটি কুকুরই ভাল আছে। আমরা সারাক্ষণ তাদের পর্যবেক্ষণে রেখেছি।'