রামকৃষ্ণ মিশনে ভর্তি হওয়ার ৫ দিনের মাথায় জলে ডুবে মৃত্যু হল এক ছাত্রের। সাঁতার কাটতে গিয়ে ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার রহড়া রামকৃষ্ণ মিশনে। ছাত্রের নাম উজ্জ্বল গোস্বামী (১৮)। তিনি বর্ধমান শহরের সুকান্ত নগরের বাসিন্দা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক ছড়িয়েছে। ঘটনায় রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে ওই ছাত্রের পরিবার।
আরও পড়ুন: বাবা ছেলের পরে এবার শ্রীরামপুরের ২ বন্ধু, টেনে নিল পুরীর সমুদ্র, উদ্ধার নিথর দেহ
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, উজ্জ্বল বরাবরই পড়াশোনায় ভালো ছাত্র ছিল। সেই হিসেবে এলাকায় তাঁর বেশ সুনাম রয়েছে। প্রথমে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে পড়াশোনা করেছিলেন ওই পড়ুয়া। তারপরে দেওঘর রামকৃষ্ণ মিশন থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর রহড়া রামকৃষ্ণ মিশনে জুওলজি অনার্সে ভর্তি হয়েছিলেন গত ১৮ জুলাই। রবিবার সকালে মিশনের পুকুরে সাঁতার কাটছিলেন তিনি। সেই সময় জলে ডুবে তাঁর মৃত্যু হয়। রহড়া রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজরা জানিয়েছেন, সকাল ৯'টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে। মৃতদেহ উদ্ধারের পর রবিবার সন্ধ্যায় ওই ছাত্রের মৃতদেহ বর্ধমানের বাড়িতে রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন এবং বেলুড় মঠের সন্ন্যাসীরা দিতে আসেন। তখনই তাঁদের ওপর পরিবারসহ এলাকার মানুষজন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। ঘটনাস্থলে আসে বর্ধমান থানার পুলিশ।
ওই ছাত্রের কাকা সুবীর গোস্বামী বলেন, ‘উজ্জ্বল সাতাঁর শিখেছিল। একজন সাঁতার শেখা ছাত্র কীভাবে জলে ডুবে মারা গেল? আমরা চাই এর পূর্ণাঙ্গ ও সঠিক তদন্ত হোক। দোষীরা শাস্তি পাক।’ পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ মূলত রহড়া রামকৃষ্ণ মিশনে নিরাপত্তার অভাবেই এই মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছে। এমনকী সেখানে কোনও সিসিটিভি ছিল না বলে দাবি করেন পরিবারের লোকজন। অন্যদিকে, এলাকার মানুষ বিক্ষোভ দেখানোই বর্ধমান থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে ওই সন্ন্যাসীদের উদ্ধার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়।
এবিষয়ে বেলুড় মঠের সন্ন্যাসী উজ্জল মহারাজ জানান, ‘একটি ঘটনা ঘটেছে। ওই ছাত্রটি প্রতিদিনই পুকুরে স্নান করতে যেত। আমরা ইতিমধ্যেই ওখানকার থানায় এই বিষয়ে জানিয়েছি। তারাও তদন্ত করে দেখছে।’ যদিও পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে নিরাপত্তার অভাবে এই ঘটনা ঘটেছে। এনিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ। যদিও স্থানীয়দের অনেকের দাবি, ওই ছাত্রটি বহু বছর ধরে রামকৃষ্ণ মিশনে পড়াশোনা করেছে। নিশ্চয়ই ছাত্রটি সাঁতার জানতো। তা সত্ত্বেও কেন এই ধরনের ঘটনা? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।