ট্রেন আসা সত্ত্বেও রেলগেট খুলে রেখেছিলেন গেটম্যান। যার ফলে ট্রেনের সামনে দিয়েই নিশ্চিন্তে রেললাইন পারাপার করছিলেন সাধারণ মানুষ। অথচ রেল লাইন গেট বন্ধ করার বিষয়ে কোনও হুঁশ নেই গেটম্যানের। দীর্ঘক্ষণ রেলগেট খোলা থাকায় এভাবেই দাঁড়িয়ে থাকে ট্রেন। শেষে জানা যায়, গেটম্যান ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। আর সেই কারণেই তিনি রেলগেট বন্ধ করেননি। অবশেষে ট্রেন চালকের তৎপরতায় দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হল। এমন ঘটনা ঘটল দক্ষিণ পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের আমতা শাখায়।
আরও পড়ুন: সব ট্রেনেই বসবে সিসি ক্যামেরা, কামরার ভেতর এদিক ওদিক করলেই চেপে ধরবে রেল
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে হাওড়া থেকে আমতা যাচ্ছিল একটি লোকাল ট্রেন। সেই সময় জগৎবল্লভপুর বড়গাছিয়া রোডের উপর লেভেল ক্রসিংয়ের রেলগেট খোলা ছিল। সেই কারণে ট্রেন সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সিগন্যাল লাল ছিল। ফলে রেলগেটের কাছেই ট্রেনটি থেমে যায়। এই অবস্থাতেই দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে ট্রেনটি। চালক বেশ কয়েকবার হর্ন দেন। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত চালক নিজেই ট্রেন থেকে নেমে এসে গেটম্যানকে ডাকাডাকি শুরু করেন। অনেক ডাকাডাকি করার পর গেটম্যান অবশেষে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। তখন জানা যায় গেটম্যান আসলে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। এরপর তিনি রেলগেট বন্ধ করে দেন। তখন আবার গন্তব্যস্থলে রওনা দেয় ট্রেনটি। জানা গিয়েছে, গেট ইন্টারলকিংয়ের ছিল। যার ফলে গেট বন্ধ না হলে সিগন্যালও সবুজ হয় না। ফলে ট্রেন যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা ছিল না। এর ফলে কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি।
জানা গিয়েছে, ওই গেটম্যানের নাম এন গোবিন্দ। এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে রেল। যদিও এমন ঘটনার জন্য গেটম্যানকে দায়ী করতে চাইছেন না রেলের ইঞ্জিনিয়ার এবং আধিকারিকদের একাংশ।তাদের মতে, রেল প্রচুর শূন্য পদ রয়েছে। সেই শূন্য পদে নিয়োগ না হলে গেটম্যানদের উপর চাপ বাড়ছে। তাদের ওভার ডিউটি করতে হচ্ছে। এর ফলে ক্লান্তি বাড়ছে। এই অবস্থায় রাতে তাদের চোখ লেগে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। যদিও সাধারণ নাগরিকদের মতে, রেলের একজন দায়িত্বশীল কর্মী হিসেবে তার দায়িত্ব পালন করা উচিত। এরকম ভাবে ঘুমিয়ে পড়া একেবারে ঠিক হয়নি। জানা গিয়েছে, যখন ট্রেনের চালক গেটম্যানকে জিজ্ঞেস করছিলেন যে তিনি কী করছিলেন? তখন উত্তরে গেটম্যান বলেন, ‘দেখছিলাম।’ যদিও কী দেখছিলেন? তার উত্তর দিতে পারেননি তিনি। বিষয়টি রেল কর্তৃপক্ষকে জানান ট্রেনের চালক। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।