বাঁকুড়ার মশাগ্রাম রেললাইনকে বর্ধমানের কর্ডলাইনের সঙ্গে সংযুক্ত করার দাবি দীর্ঘদিনের। এবার তা পূরণ হতে চলেছে। বর্ধমান কর্ডলাইনের সঙ্গে যুক্ত না থাকার ফলে বর্তমানে খড়গপুর হয়েই হাওড়া যাতায়াত করতে হয় মশাগ্রাম সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের। এরফলে তাদের অনেক বেশি পথ অতিক্রম করতে হয়। এবার দ্রুত তাদের সেই সমস্যার সমাধান হতে চলেছে। মশাগ্রাম রেললাইনকে বর্ধমানের কর্ডলাইনের সঙ্গে সংযুক্ত করার কাজ প্রায় শেষের দিকে। দ্রুতই এই কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে রেলের তরফে জানানো হয়েছে। এরফলে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ হাওড়া যাতায়াতের ক্ষেত্রে সুবিধা পাবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, একবার এই রেললাইন চালু হলে সেক্ষেত্রে মশাগ্রাম থেকে হাওড়ার দূরত্ব অনেকটাই কমে যাবে। উল্লেখ্য, বর্তমানে খড়গপুর হয়ে বাঁকুড়া থেকে হাওড়ার দূরত্ব ২৩১ কিলোমিটার। তবে নতুন এই রেললাইনের ফলে সেই দূরত্ব কমে হতে চলেছে ১৮৫ কিলোমিটার। ফলে সেক্ষেত্রে দূরত্ব কমবে ৪৬ কিলোমিটার। অর্থাৎ সময়ের নিরিখে প্রায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা কম লাগবে হাওড়া যাতায়াতের ক্ষেত্রে। একই ভাবে দূরপাল্লার ট্রেনের ক্ষেত্রেও দূরত্ব কমবে। আদ্রা থেকে হাওড়ার দূরত্ব যেখানে ২৮৫ কিলোমিটার সেখানে নতুন এই রেল লাইনের ফলে দূরত্বও কমে ৪৬ কিলোমিটার হবে। এরপরে সেখানকার মানুষের যাতায়াতের খরচ এবং সময় দুই কমবে।
প্রসঙ্গত, মশাগ্রাম থেকে বর্ধমান কর্ডলাইন সংযুক্তিকরণের দাবিকে মাথায় রেখে সেই সময় উদ্যোগ নিয়েছিলেন প্রয়াত সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া। সেই সময় তিনি যেহেতু লোকসভায় রেলের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন সেই সূত্রে এই রেললাইন সংযুক্তিকরণের জন্য একাধিক পদক্ষেপ করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত মশাগ্রাম থেকে বর্ধমান কর্ডলাইন সংযুক্তকরণের কাজ শুরু হয়।
মশাগ্রাম থেকে বাঁকুড়া পর্যন্ত রেললাইনের বৈদ্যুতিকরণের কাজও এর আগে শেষ হয়েছে। এবার আর কিছুদিনের অপেক্ষা। তারপরে বর্ধমান কর্ড লাইনের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে যাবে মশাগ্রাম রেললাইন। রেলের আধিকারিকদের মতে, এই রেলপথে লোকাল ট্রেন চালানোর পাশাপাশি বহু দূরপাল্লার ট্রেনও চালানো যাবে। পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানান, এই কাজ প্রায় শেষের দিকে। দ্রুত নতুন রেলপথের উদ্বোধন হবে। বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার বলেন, খুব সামান্য অংশ কাজ বাকি রয়েছে। তা শেষ হলে এই পথে রেল চালানো যাবে।