পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকেই দলের গাইডলাইনের বিপরীত পথে হাঁটছেন তিনি। তাই তিনি এখন ব্রাত্য তৃণমূল কংগ্রেসে। এমনটাই মনে করেন তিনি। আর এই আবহে তিনি একুশে জুলাইয়ের শহিদ দিবসে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে নির্দলদের পাশে দাঁড়িয়েও বিরাট সাফল্য আসেনি। এই পরিস্থিতিতে কেউ তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখে না। তাই অভিমানে তিনি এখন অন্তরালকেই বেছে নিচ্ছেন। হ্যাঁ, তিনি ইসলামপুরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক আবদুল করিম চৌধুরী। এবার কি তিনি বিজেপিতে ঝাঁপ দেবেন? উঠছে প্রশ্ন।
এদিকে একুশে জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশে তিনি না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য–রাজনীতিতে। একুশে জুলাই কি বিজেপিতে যাচ্ছেন ইসলামপুরের বিধায়ক আবদুল করিম চৌধুরী? গুঞ্জন শুরু হয়েছে। এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি তৃণমূল কংগ্রেসের বিদ্রোহী বিধায়ক। তাই ওরা আমাকে বহিষ্কার করবে। আমি বহিষ্কৃত বিধায়কই থাকব। অন্য কোনও দলে যাব না। কারণ এই তৃণমূল দলটা তৈরির সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমিও ছিলাম। উত্তরবঙ্গের আমি প্রথম বিধায়ক হই। করিম চৌধুরী আজকের নেতা না। গত ৫৫ বছর ধরে আছি। সহজে ছেড়ে দেব না মাটি।’
কিন্তু ইসলামপুর ছেড়ে শহিদ সমাবেশে যেতে আপত্তি কেন? এই নিয়েও বিস্ফোরক তথ্য দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক। আশঙ্কা করে তিনি বলেন, ‘ইসলামপুর ছেড়ে গেলে আমার অনুগামীদের উপর নতুন করে হামলা হতে পারে। তাই অনুগামীদের রক্ষা করতেই আমি শহিদ দিবসে অংশ নেব না। ভোট পরবর্তী হিংসায় আমার অনুগামীদের উপর অত্যাচার নেমে এসেছে। কারও যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। কাউকে মারধর করে বাড়ির জিনিসপত্র নষ্ট করে দিয়েছে’। এই প্রথমবার শহিদ সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন না আবদুল করিম চৌধুরী। যদিও আবদুল করিম চৌধুরীর আশঙ্কা অমূলক বলেই মনে করছে তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: এবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কোন ইস্যু নিয়ে?
বিধায়কের অভিমান ঠিক কোথায়? নির্দল হিসাবে অনুগামীদের তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রার্থী করে এখন বিপাকে করিম। তবে তাঁর মনে অভিমানের জন্ম নিয়েছে। তাই আবদুল করিম চৌধুরী সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘আমি এখন তৃণমূল কংগ্রেসের অজানা লোক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথা দিয়েছিল যে করিম দা আপনি ইসলামপুরের, আর ইসলামপুরটা আপনারই। এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলটাকে অন্য কাউকে দিয়ে চালাচ্ছে। তাই দলে আমার কদর নেই। এক সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, করিমদা আপনি সম্মানীয় ব্যক্তি। আপনি দলে এলে দলের সম্মান বাড়বে। আজ এমন অবস্থা যে, করিম চৌধুরীর নিজেরই কোন ওজন নেই।’ পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘একেক সময় একেকরকম কথা বলেন করিম চৌধুরী। ওঁর কথা ঠিক নেই। দল ওঁর ব্যাপারে সব জানে। সবাই শুনতে পাচ্ছে। নতুন করে আমার কিছু বলার নেই।’