টোটো ই রিকশা নিয়ন্ত্রণে আগেই একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। আর এবার পুজোর সময় এই যান নিয়ন্ত্রণে আরও তৎপর হল প্রশাসন। মূলত জাতীয় সড়কে অনিয়ন্ত্রিত টোটো ই রিকশার কারণেই যানজট বাড়ছে এবং তার ফলে বাড়ছে দুর্ঘটনা। পুজোতে এমনিতেই রাস্তায় মানুষ এবং যানবাহনের ব্যাপক ভিড় থাকে, তার ওপর টোটো চললে যানজট আরও বেড়ে যায়। আর সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কাও বেড়ে যায়। সেই কথা মাথায় রেখেই এবার পুজোয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে মূল রাস্তায় টোটো চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাসে লোক নেই তাই বেআইনি টোটো, ই-রিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার পথে পরিবহণ দফতর
বারুইপুর প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, শুধুমাত্র ছোট রাস্তা এবং গলিতেই টোটো চলবে। তবে প্রধান রাস্তাগুলিতে টোটো চলতে দেওয়া হবে না। এর পাশাপশি বেশ কিছু পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত টোটোগুলিকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে, যে সমস্ত টোটায় করে পড়ুয়ার স্কুলে যায় সেই সমস্ত টোটোগুলি এ ক্ষেত্রে ছাড় পাবে। যদিও সেক্ষেত্রে আগে অভিভাবকদের পুলিশের কাছে লিখিত আবেদন জানাতে হবে বলে প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বারুইপুরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল হল বারুইপুর সদর মহকুমা হাসপাতাল। সেক্ষেত্রে দুর্গাপুজোয় তীব্র যানজটের কারণে রোগীদের হাসপাতালে যেতে সমস্যা হয়। এর আগেও বিগত কয়েক বছর ধরে এই সমস্যা হচ্ছে। সেই কথা মাথায় রেখেই এবার প্রশাসনের তরফে এই পদক্ষেপ। প্রশাসনের তরফে এই নির্দেশিকা জারি হওয়ার পরেই রাস্তায় নেমেছে পুলিশ। বারুইপুরের পুলিশকে রাস্তায় নেমে যান নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যাচ্ছে। পুলিশের দাবি, শুধু যানজট নিয়ন্ত্রণ নয়, উৎসবের দিনগুলিতে যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে সেই সমস্ত কথা মাথায় রেখে রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
যদিও প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে মোটেও সন্তুষ্ট নয় টোটো সংগঠনগুলি। এ নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই তারা বিক্ষোভ মিছিল করছে। তাদের বক্তব্য, অনেকেই ঋণ নিয়ে টোটো কিনেছেন। তাছাড়া টোটোর আয় থেকেই তাদের সংসার চলে। কিন্তু, সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে তারা ইএমআই মেটাতে পারবেন না। তাছাড়া তাদের পক্ষে সংসার চালানোও কঠিন হয়ে যাবে। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার পুলিশ এবং মহাকুমা শাসকের কাছে এনিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন টোটো চালকরা। প্রসঙ্গত, শুধু বারুইপুর নয় মেদিনীপুর শহরেও একইভাবে পুজোর দিনগুলিতে টোটো বা ই রিকশা চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রেও তাদের লক্ষ্য হল যানজট নিয়ন্ত্রণ করা এবং দুর্ঘটনা রোধ করা।