চলতি মাসেই ঝাড়গ্রাম সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেখানে ভাল ফল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাছাড়া এখন জেলা সফর মুখ্যমন্ত্রীকে অনেক সময় নিয়ে এক–একটি জেলায় যেতে হচ্ছে। কারণ পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে উত্তরবঙ্গ সফর সেরে ফেরার সময় হেলিকপ্টার দুর্যোগের কবলে পড়েছিল। তাতে মুখ্যমন্ত্রী মারাত্মক চোট পান। ছোট একটা অস্ত্রোপচার পর্যন্ত করতে হয়। বিশ্রামে থাকতে হয় বেশ কিছুদিন। তখন চলে ফিজিওথেরাপি। এখন তিনি সুস্থ হয়ে গেলেও চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী বেশি মুভমেন্ট করা বারণ।
কবে ঝাড়গ্রাম সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী? নবান্ন সূত্রে খবর, দুর্গাপুজোর ঠিক আগে সেপ্টেম্বর মাসে একবার দুয়ারে সরকার শিবির করবে রাজ্য সরকার। তার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই জেলা সফরে যেতে চলেছেন। সেপ্টেম্বরের জেলা সফরের কর্মসূচি এখনও ঠিক হয়নি। তবে ৮ ও ৯ অগস্ট ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই তখন জেলা সফরে যাবেন। সেখানে বেশ কিছু কাজ তিনি খতিয়ে দেখবেন। তাঁর সঙ্গে মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা সেখানে উপস্থিত থাকবেন। আবার একই সঙ্গে রাজনৈতিক কর্মসূচিও থাকছে তাঁর।
আর কী জানা যাচ্ছে? এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদে জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনেও জিতেছে শাসকদল। এই পরিস্থিতিতে মানুষের কি সমস্যা আছে, আর মানুষের যদি কোনও দাবি থাকে সেগুলি তিনি শুনবেন। পাশাপাশি গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদে কেমন করে কাজ করতে হবে, কোন কাজগুলি আগে করতে হবে সেগুলি তিনি বাতলে দেবেন। এমনকী কোনও প্রতিশ্রুতিও পূরণ করতে পারেন বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: গঙ্গায় তলিয়ে গেল আসানসোলের দুই পড়ুয়া, কলকাতায় এসে কেন ঘটল এমন বিপদ?
জেলা সফরের শুরুতেই ঝাড়গ্রাম কেন? এই জনজাতি এলাকায় বিজেপি–আরএসএস হেরে গিয়েও বাড়তি সময় দিচ্ছে। কারণ তাদের লক্ষ্য লোকসভা নির্বাচন। এখান থেকে তাই বাড়তি আসন চাই। বাংলা থেকে ৩৫টি আসনের লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে গিয়েছে খোদ অমিত শাহ। তারপর যে স্ট্র্যাটেজি তৈরি হয়েছে তাতে ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এমন সব জেলা রয়েছে। তাই এখন থেকেই তারা বাড়তি সময় দিচ্ছে। সে খবর পৌঁছে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। তাই তাদের হাটে হাঁড়ি ভাঙতেই ঝাড়গ্রামকেই তিনি আগে বেছে নিয়েছেন। তাই এখানের সব কাজ যথাযথভাবে হচ্ছে কিনা তা সরেজমিনে দেখতেই ঝাড়গ্রামে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাছাড়া ঝাড়গ্রামে নেতৃত্ব বদল করে সুফল পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বীরবাহা হাঁসদার মতো তরুণ মুখকে সামনে আনায় বেড়েছে গ্রহণযোগ্যতা। লোকসভা নির্বাচনে ঝাড়গ্রাম–সহ অন্যান্য এলাকায় ভোট প্রচার–সহ বাড়তি দায়িত্ব বীরবাহাকে দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।