ছত্রধর মাহাতো। জঙ্গলমহলের পরিচিত মুখ। ভোটের মুখে সেই ছত্রধরই হয়ে উঠেছিলেন জঙ্গলমহলে তৃণমূলের মুখে হাসি ফোটানোর অন্য়তম কাণ্ডারি। আর সেই ২৭শে মার্চ ভোট মিটতেই মধ্যরাতে লালগড়ের আমলিয়া গ্রামের বাড়ি থেকে ছত্রধর মাহাতোকে গ্রেফতার করে এনআইএ। বর্তমানে তিনি জেলবন্দি। প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বন্দি তিনি। ২০০৯ সালে অক্টোবর মাসে বাঁশতলা স্টেশনে জ্ঞানেশ্বরী মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ছত্রধর মাহাতো। সেই সময়ও তিনি জেলবন্দি ছিলেন। তবে এনআইএ দাবি করেছিল জেল থেকেই গোটা ঘটনার ছক কষেছিলেন তিনি। সেই মামলাতেই বর্তমানে জেলবন্দি ছত্রধর। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের মতে, তিনি তো তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক। তাঁর স্ত্রীও রাজ্য নারী ও শিশু সুরক্ষা কমিশনের সদস্য। এবারের ভোটে তৃণমূলকে জেতাতে একেবারে ময়দানে নেমে প্রচার করেছিলেন ছত্রধর সহ অন্যান্যরা। জঙ্গলমহলে ভালো ফলও করেছে ঘাসফুল শিবির। এখানেই প্রশ্ন উঠছে সেই জেলেই তো নারদ মামলায় অভিযুক্ত রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী, বিধায়ক বন্দি রয়েছেন। তাঁদের মুক্তির দাবিতে রাস্তায় নেমেছিল তৃণমূল। ঝাড়গ্রামেও দেখা গিয়েছিল এই প্রতিবাদ। তবে এখন সেই সরাসরি প্রতিবাদের ঝড় কিছুটা কমেছে। কিন্তু এখানেই প্রশ্ন সেই প্রতিবাদের, সেই মুক্তির দাবিতে আন্দোলনের ছিঁটেফোঁটাও কি ছত্রধরের জন্য হয়েছে?
ছত্রধরের দীর্ঘদিনের সঙ্গী তথা বর্তমানে লালগড়ের যুব তৃণমূল নেতা বলেন, প্রতিহিংসার জন্যই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর জন্যও প্রতিবাদ হওয়া উচিৎ ছিল। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা প্রতিবাদ জারি রেখেছি।
কিন্তু কেন ছত্রধরকে নিয়ে এই অস্বস্তি? দলের একাংশের মতে, আসলে ছত্রধরের অতীত নিয়ে কিছুটা অস্বস্তিতে রয়েছে তৃণমূল। কিন্তু এবার ভোটের ফলে যেভাবে তৃণমূলের পালে হাওয়া উঠেছে তাতে একথা প্রমাণিত ছত্রধরের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে জঙ্গলমহলে। সেক্ষেত্রে তাঁর মুক্তির দাবিতে দলের অন্দর থেকে জোরালো আওয়াজ ওঠা উচিৎ ছিল। তবে নির্বাচনী বিধির জন্য সেই সময় আন্দোলন করা যায়নি। এমনটাই মত জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের। প্রশ্ন উঠছে তবে কি দলের অন্দরে প্রয়োজন ফুরিয়েছে ছত্রধরের?