ফের অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল কল্লোলিনী কলকাতা। তুমুল বৃষ্টির মধ্যে বৃদ্ধা মাকে প্লাস্টিকে মুড়িয়ে রাস্তায় ফেলে দিয়ে গেল মেয়ে। অবশেষে অবিশ্রান্ত বারিধারায় পড়ে থেকে তাঁর মৃত্যু হল। বরানগরের সিঁথি থানা এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। আর তার জেরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। মেয়ের অমানবিকতার নজির দেখে হতবাক প্রতিবেশীরা। তাকে গ্রেফতারের দাবি উঠেছে। এই ঘটনায় বৃদ্ধার ছেলেরাও জড়িত বলে অভিযোগ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বৃষ্টির রাতে অশীতিপর বৃদ্ধাকে সিঁথির মোড় সংলগ্ন মেট্রো বাইপাসে ফেলে দিয়ে চলে যায় তাঁর সন্তান। মঙ্গলবার রাতে ওই নির্জন এলাকায় বৃদ্ধার আর্তনাদ শুনতে পান স্থানীয়রা। তখন এলাকার বাসিন্দারা বেরিয়ে আসেন। এক বৃদ্ধাকে পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা। আপাদমস্তক ঢেকে দেওয়া হয়েছিল প্লাস্টিকের মোড়কে। তৎক্ষণাৎ তাঁকে ওই প্লাস্টিক বের করে আনা হয়। এমনই দুর্যোগে মায়ের সঙ্গে চরম অমানবিক আচরণ করতে দেখা যায় মেয়েকে। সিঁথির পেয়ারাবাগান এলাকার বাসিন্দা ঠাকুরদাসী সাহাকে প্লাস্টিকে মুড়ে রাস্তায় ফেলে রেখে যায় বলে অভিযোগ।
এই ঘটনা দেখে খবর দেওয়া হয় সিঁথি থানায়। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ এবং ওই মহিলাকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনায় মানসিকভাবে খুব ধাক্কা পেয়েছিলেন বৃদ্ধা। পরে তিনি পুলিশকে জানান, দু’জন যুবককে টাকা দিয়ে ওই এলাকায় তাঁকে ফেলে দিতে বলেছিল বৃদ্ধার মেয়ে। তাই তাঁকে রিকশা করে ওই জায়গায় ফেলে দিয়ে যাওয়া হয়। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতাল থেকে সুস্থ করে ঠাকুরদাসী সাহাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার পরই তাঁর মৃত্যু হয়।
এই ঘটনার পরই এলাকায় ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায়। প্রতিবেশীরা সকলেই বৃদ্ধার মেয়েকে দুষতে থাকেন। কেন মেয়ে বৃদ্ধা মাকে এমন দুর্যোগের মধ্যে বাড়ির বাইরে বের করে দিল? প্রশ্নও উঠেছে। ওই বৃদ্ধাকে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। সেখানে চিকিৎসা করানোর পর বাড়ি পাঠানো হয়। তাঁর পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। ঠিক কী ঘটেছিল তা জানার জন্য তদন্ত চালানো হচ্ছে।