বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলে থাকেন ফেডারেল স্ট্রাকচার মেনে চলা উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের। এবার সেটাই কার্যত শুনলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। সংবিধানে উল্লেখ রয়েছে শিক্ষাব্যবস্থা কেন্দ্র–রাজ্য সম্মতিতেই চালাতে হয়। তাই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে আমন্ত্রণ করলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। আর এই ঘটনা নিয়ে এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী মনে করেন, তাঁরা একসঙ্গে গিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলে সব বোঝাবেন। এখানে ছাত্র মৃত্যুর পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া উত্তরে ইউজিসি সন্তুষ্ট নয় বলে স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন সুভাষ সরকার।
ঠিক কেমন আমন্ত্রণ সুভাষের? যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে এখন রাজ্য–রাজনীতি সরগরম। তার মধ্যেই কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুভাষ সরকার বলেন, ‘শিক্ষার ক্ষেত্রে কেন্দ্র–রাজ্যকে একসঙ্গে কাজ করতে হয়। তবে কোনও ব্যবস্থা কার্যকর করা রাজ্য সরকারের দায়। বাংলার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে বলতে চাই, চলুন একসঙ্গে যাই। একসঙ্গে সব সমস্যা শুনব। ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলব। আমরা ভাল কাজের জন্যই যাব। পরিস্থিতি কীভাবে ভাল হবে এবং সুস্থ হবে সেটা দেখার জন্য যাব।’
এদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার পর রাজ্যজুড়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই দু’দফায় বেশ কয়েকজন পড়ুয়া এবং প্রাক্তনীকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন। রাজ্যপাল ছুটে গিয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং আজ বুধবার ওখানকার কর্তৃপক্ষ সহ কয়েকজনকে বৈঠকে ডেকেছেন। হস্টেলে প্রাক্তন পড়ুয়ারা কেমন করে থাকতেন? জানতে চাইবেন আচার্য বলে সূত্রের খবর। একই প্রশ্ন তুলেছেন সুভাষ সরকার। তাঁর দাবি, হস্টেলের আবাসিকদের এমনই দাপট, শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনই নয়, মাথানত করত রাজ্য প্রশাসনও। তাই ক্যাম্পাসের ভিতর পুলিশ কিয়স্ক বসানোর দাবি তুলেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: রেজিস্ট্রার এবং ডিন অফ স্টুডেন্টসকে লালবাজারে তলব, যাদবপুর কাণ্ডে নয়া মোড়
আর কী জানা যাচ্ছে? ইউজিসি–কে যে উত্তর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় পাঠিয়েছে তাতে আদৌ সন্তুষ্ট নয় তাঁরা বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যু নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট তলব করেছিল ইউজিসি। উত্তরও দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তারপর তাঁরা আর প্রতিনিধিদল পাঠাচ্ছেন না। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের দাবি, ছাত্রের মৃত্যুর পর কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? তা নিয়ে কোনও তথ্য নেই। জবাবি চিঠি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে আবারও তথ্য তলব করতে পারে ইউজিসি। সব তথ্য খতিয়ে দেখার পরই ইউজিসির প্রতিনিধিদল আসতে পারে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে।